“দুই শতক জমি”
প্রকাশিত হয়েছে : ৮:৫০:০০,অপরাহ্ন ২২ জানুয়ারি ২০২১ | সংবাদটি ৫৩৬ বার পঠিত
পল্লব হোম দাস
কবি গুরুর চিত্রা কাব্যগ্রন্থের ” দুই বিঘা জমি” একটি বিখ্যাত ও ব্যঙ্গাত্মক কবিতা যেখানে তৎকালীন গ্রামীন সমাজের দুর্বলের উপর সবলের অন্যায় অত্যাচারের কাহিনী বিবৃত হয়েছে। রবীন্দ্রনাথ চমৎকার ভাবে দেখিয়েছেন কিভাবে গরীব অসহায় মানুষের জমি ধনীক শ্রেণি কর্তৃক জোরপূর্বক দখল করা হয়। সময় পাল্টেছে, মানুষের জীবনযাত্রায় কতশত পরিবর্তন এসেছে। দুই বিঘা জমি’ র কাহিনী যে সমাজ থেকে একেবারে নির্মুল হয়েছে তা শতভাগ বলা যাবে না তবে অনেকাংশে হ্রাস পেয়েছে। যাই হোক, আজ আমরা “দুই শতক জমি” র গল্প পড়বো। যে গল্পে কেড়ে নেয়ার কোন যাতনা নেই, হারানোর বেদনা নেই, জমির পারে দাঁড়িয়ে অশ্রু বিসর্জনের চিত্র নেই, ভিটে মাটি হারিয়ে হতাশায় ন্যুয়ে পড়া কোন মানুষের আত্মহত্যার মিছিল নেই, আছে শুধু পাওয়ার গল্প, চোখে মুখে নতুন স্বপ্ন বুনার গল্প, নিজের জমিনে, নিজের একটা শান্তি কুটিরে নিশ্চিন্তে ঘুমিয়ে পড়ার গল্প। আর এই গল্পের পান্ডুলিপি রচনা করেছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। অত্যন্ত সুনিপুণ ভাবে তিনি ভিটে মাটিহীন ও আশ্রয়হীন মানুষের কথা চিন্তা করে স্বপ্নের একটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছেন।
আর মাত্র কয়েকটি মুহূর্ত। এরপরই মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শুভ উদ্বোধন করতে যাচ্ছেন প্রথম পর্যায়ে বাস্তবায়িত প্রায় ৬৫ হাজার ঘরের পূর্নাঙ্গ রূপ। দুই শতক জমির উপর নির্মিত এই সুদৃশ্য ঘরগুলো বুঝিয়ে দেয়া হবে ৬৫ হাজার পরিবারকে। এতগুলো ঘরে পড়বে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মমতার ছোঁয়া, এক সুদূরপ্রসারী চিন্তা চেতনার অধিকারী মানুষের ভালোবাসার আলোয় ভরে উঠবে এই ঘরগুলো।
মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে জমি ও গৃহ প্রদান হতে যাচ্ছে মুজিব বর্ষের শ্রেষ্ঠ অর্জন। মাছ-বাজার কিংবা সবজি-বাজারের ফুটো হয়ে যাওয়া টিনশেডের নীচে ঘুমানোর দিন শেষ হতে চলেছে অনেক পরিবারের। খোলা আকাশের নীচে প্রচন্ড শীত কিংবা ঝড় বৃষ্টিতে ভিজে রাত্রি যাপনের অবসান হতে চলেছে হাজারো মানুষের। সন্ধ্যা নামলেই কোন আশ্রয়ে গিয়ে দাঁড়াবে সেই প্রশ্নের উত্তর আর খুঁজতে হবে না। অনিশ্চিত আঁধার আর গ্রাস করবে না তাদের জীবনে। ” দুই বিঘা জমি ” যেখানে হারানোর তেতো স্বাদ দেয় সেখানে ” দুই শতক জমি” শুধুমাত্র আলোয় ফেরার গল্প। চোখেমুখে বাঁধনহারা উচ্ছ্বাসের গল্প।
লেখক, সহকারী কমিশনার (ভূমি), জকিগঞ্জ, সিলেট।