জকিগঞ্জের দিনমজুরের একমাত্র ছেলে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় খুন; পরিবারে শোকের মাতম
প্রকাশিত হয়েছে : ১:৫০:৩৪,অপরাহ্ন ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২০ | সংবাদটি ৪০৪ বার পঠিত
কে এম মামুন:
অভাবের সংসারে বহু কষ্ট করে সন্তানকে লেখাপড়া শিখিয়েছিলেন বাবা।দিনমজুর বাবার সংসারে মা–বাবা আর তিনটি বোনের কথা চিন্তা করে বেশি দূর এগুতে পারেনি সন্তান। দায় দেনা করে কিছু টাকা যোগাড় করে দুই বছর আগে নিরাপত্তা প্রহরীর চাকরি নেন সিলেটের জকিগঞ্জ উপজেলার চান্দপুর এলাকার খীরোদ বিশ্বাসের ছেলে রাজেশ(২৫)। নির্মম নিয়তি। দুর্বৃত্তদের হাতে নৃশংসভাবে খুন হন তিনি। রোববার নিহত রাজেশর মরদেহ গ্রামের বাড়িতে পৌঁছলে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন পরিবারের সদস্যরা। মা-বাবা, বোন ও স্বজনদের আহাজারিতে ভারি হয়ে উঠে পুরো এলাকা। রাতেই রাজেশের সৎকার সম্পন্ন হয়েছে শোকাবহ পরিবেশে।
গত শনিবার রাতে আশুগঞ্জ উপজেলার গোলচত্তরের পাশে নজরুল ডাক্তারের বিল্ডিংয়ের দ্বিতীয়তলা থেকে নৈশপ্রহরী রাজেশ বিশ্বাসের (২৫) হাত-পা বাঁধা রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ভল্টের টাকা লুট করতে বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক লিমিটেডের (বিডিবিএল) ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ শাখার নৈশপ্রহরী রাজেশকে নৃশংসভাবে খুন করা হয়। দুর্বৃত্তরা ব্যাংকের লকার ভাঙলেও ভল্ট ভাঙতে পারেনি। তবে ব্যাংকের বিভিন্ন টেবিলের ড্রয়ার ভেঙে কাগজপত্র তছনছ করে। নিহত রাজেশ বিডিবিএল ব্যাংকে ২০১৮ সালের মে মাস থেকে নৈশপ্রহরী হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
পুলিশ ও ব্যাংক সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার ব্যাংকের কাজ শেষ করে রাতে ব্যাংকের ভেতরেই নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিলেন রাজেশ। শনিবার রাতে ব্যাংকের একজন কর্মকর্তা এসে ভিতরে যাওয়ার জন্য ডাকাডাকি করেও কোনো সাড়া পাচ্ছিল না। পরে তারা পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ এসে দরজা ভেঙে ভেতরে ঢুকে রাজেশের হাত-পা বাঁধা রক্তাক্ত লাশ দেখতে পায়। পরে পুলিশ নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য জেলা সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠায়। এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ব্যাংকের দুইজন নিরাপত্তাকর্মীকে আটক করেছে গোয়েন্দা পুলিশ। ব্যাংক কর্তৃপক্ষ জানায়, দুর্বৃত্তরা ব্যাংকের লকার ভাঙ্গলেও ভল্ট সুরক্ষিত আছে। যার কারণে নগদ কোনো টাকা খোয়া যায়নি। তবে টেবিলের বিভিন্ন ড্রয়ার ভেঙ্গে কাগজপত্র তছনছ করেছে এবং একটি ল্যাপটপ নিয়ে গেছে। এ ছাড়া ব্যাংক ভবনের উত্তর পাশের জানালার গ্রিল কাটা পাওয়া যায়। বিডিবিএল ব্যাংক আশুগঞ্জ শাখার ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ মোবাশ্বের হোসেন সাংবাদিকদের জানান, রাজেশের মৃত্যুর বিষয়ে থানায় একটি হত্যা মামলা ও ব্যাংকের ভল্টের বিষয়ে একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়।
আশুগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাবেদ মাহমুদ জানান নিহতের শরীরে একাধিক ধারালো অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন ছিল।