শিলচর ডিটেনশন ক্যাম্পের দুই বাংলাদেশি বন্দিকে সমঝে নিল বাংলাদেশ
প্রকাশিত হয়েছে : ২:৩৬:৪০,অপরাহ্ন ০৬ অক্টোবর ২০২১ | সংবাদটি ৬৩৪ বার পঠিত
তাজ উদ্দিন: শিলচর, ৬ অক্টোবর: আসামের শিলচর কেন্দ্রীয় কারাগারের ডিটেনশন ক্যাম্পে বন্দি হয়ে থাকা ২ বাংলাদেশি নাগরিককে মঙ্গলবার স্বদেশে ফেরত পাঠানো হল। করিমগঞ্জের বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী সুতারকান্দি সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশি দু’জনকে হস্তান্তর করা হয় বিজিবি-র হাতে। তাদের হস্তান্তর করেন আসাম পুলিশের সীমান্ত শাখার পুলিশ এবং বিএসএফ।
বাংলাদেশে প্রত্যাবর্তন করা ২ বাংলাদেশি নাগরিকের নাম জাহানারা বেগম (৩৮) ও হবিব মোল্লা (৩৭) বলে জানা গেছে। জাহানারার বাড়ি বাংলাদেশের যশোর জেলার কটাওয়ালি থানার অধীন ফাতেহপুর গ্রামে। হবিব মোল্লা ওই দেশের পটুয়াখালী জেলার কলাপাড়া থানার অধীনস্থ বাদুরতলী গ্রামের বাসিন্দা।
বাংলাদেশি দুজনকে মঙ্গলবার সকালে ডিটেনশন ক্যাম্প থেকে সীমান্ত শাখার পুলিশ সমঝে নিয়ে যায় বলে স্বীকার করেছেন শিলচর কেন্দ্রীয় কারাগারের সুপারিন্টেন্ডেন্ট সত্যেন্দ্র বৈশ্য ।
অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশ করার অভিযোগে ২০১৩ সালে করিমগঞ্জ পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়েছিল জাহানারা বেগম। গ্রেফতারের পর তাঁকে প্রেরণ করা হয়েছিল বিচারবিভাগীয় হেফাজতে। কয়েকমাস করিমগঞ্জ জেলা কারাগারে বিচারাধীন হাজতি হিসাবে থাকার পর তাঁকে অবৈধ বিদেশি বলে রায় দেয় আদালত।
ঘোষিত বিদেশি হিসেবে চিহ্নিত হওয়ার পর জাহানারাকে করিমগঞ্জ কারাগার থেকে স্থানান্তরিত করা হয় শিলচর কেন্দ্রীয় কারাগারের ডিটেনশন ক্যাম্পে। ২০১৪ সালের ২ জানুয়ারি তাঁকে প্রেরণ করা হয় ডিটেনশন ক্যাম্পে । ওই দিন থেকে তিনি ডিটেনশন ক্যাম্পে বন্দি জীবন কাটিয়েছিলেন।
এদিকে, হবিব মোল্লাকেও অনুরূপ অভিযোগে গ্রেপ্তার করেছিল পুলিশ। অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশ করার অভিযোগে গ্রেপ্তার করার পর তিনিও মাসকয়েক কারাগারে বন্দি হিসেবে ছিলেন। বিচার প্রক্রিয়ার শেষে তাকেও ঘোষণা করা হয়েছিল অবৈধ বিদেশি হিসেবে। এরপরে ২০১৪ সালের ১০ সেপ্টেম্বর তাঁকে প্রেরণ করা হয়েছিল ডিটেনশন ক্যাম্পে।
এদিকে জাহানারা ও হবিব মোল্লার সাজা শেষ হওয়ার পরেও তারা অতিরিক্ত ভাবে বন্দি জীবন পার করতে হয়েছিল ডিটেনশন ক্যাম্পে।
এ নিয়ে বাংলাদেশ ও ভারত সরকার আলাপ-আলোচনা করে অবশেষে বাংলাদেশি দুইজনকে স্বদেশে ফিরিয়ে নিতে সম্মতি প্রকাশ করেন বাংলাদেশ। ইস্যু করেন তাদের জন্য ট্রাভেল পারমিট। এর ফল স্বরূপে মঙ্গলবার বাংলাদেশি দুজনকে সমঝে দেওয়া হয় বিজিবি-র কাছে।
এই দুইজন বাংলাদেশিকে স্বদেশে সমঝে দেওয়ার পর বর্তমান শিলচর ডিটেনশন ক্যাম্পে আরও ৬৪ জন বিদেশি রয়েছে বলে জানা গেছে। এদের মধ্যে সর্বাধিক বিদেশি মায়ানমারের। মায়ানমারের মোট ৫১ জন বন্দীর মধ্যে ২৬ জন শিশু। এর বিপরীতে বাংলাদেশি ১০ জন, নাইজেরিয়ার ২ জন এবং কেনিয়ার একজন নাগরিক ঘোষিত বিদেশি হিসেবে বন্দি হয়ে আছে ডিটেনশন ক্যাম্পে।