মেঘালয়ে ধসে মৃত ১৩, ভারতের অন্য অংশ থেকে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন বরাক-ত্রিপুরা
প্রকাশিত হয়েছে : ৬:১৩:৫৯,অপরাহ্ন ১৮ জুন ২০২২ | সংবাদটি ৫১৯ বার পঠিত
তাজ উদ্দিন : শিলচর (আসাম), ১৮ জুন : একটানা বৃষ্টি এবং জায়গায় জায়গায় ধসের জন্য ভারতের অন্য অংশ থেকে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে ত্রিপুরা, মিজোরাম রাজ্য সহ আসামের বরাক উপত্যকার কাছাড়, করিমগঞ্জ ও হাইলাকান্দি জেলা। মেঘালয়ের পাহাড়ি এলাকা দিয়ে এসেছে ভারতের
৬ নম্বর জাতীয় সড়ক। মেঘালয় রাজ্যের লুমস্লং এলাকায় সেই সড়কে বুধবার গভীর রাতে প্রথম ধস নামে। এরপর থেকে বিভিন্ন স্থানে রাস্তায় ফাটল ধরার খবর আসছে। ধস কবলিত এলাকায় আটকে পড়ে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে
রয়েছেন কয়েক হাজার মানুষ। এতেই বরাক ও ত্রিপুরা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। ধসের কবলে পড়ে তলিয়ে গেছে ট্রাক। মেঘালয়ে শুধু শুক্রবারই ধসের কবলে পড়ে মারা গেছেন সাতজন। সব মিলিয়ে এক সপ্তাহে মোট মৃতের সংখ্যা ১৩।
এদিকে, দুঃসহ জীবন যন্ত্রণায় ভুগছেন যাত্রীরা। প্রবল বৃষ্টির দরুণ মেঘালয়ে লুমস্নং সিমেন্ট ফ্যাক্টরির কিছু আগে ধস পড়ার ফলে জাতীয় সড়ক পুরোপুরি নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে। অপর দিকের পাহাড় থেকে আসা প্রবল জলোচ্ছাস ওই জায়গার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এক কথায় ওই জায়গার প্রায় ত্রিশ মিটার পুরোপুরি শূন্যে ভেসে রয়েছে। এমতাবস্থায় আর কোনও ভারী বাহন এই জায়গা দিয়ে পারাপার করার সুযোগই নেই।
এই পরিপ্রেক্ষিতে ইস্ট জয়ন্তীয়া হিলস প্রশাসন কিছু দিনের জন্য এই এলাকা দিয়ে সব ধরনের যানবাহন চলাচল নিষিদ্ধ করেছে। কারন লুমস্নং এর ওই নির্দ্দিস্ট জায়গায় পিচ বালু পাথর দিয়ে সড়ক তৈরি করা সম্ভবত আর হবে না। একদিকে খাড়া পাহাড় অন্যদিকে গভীর খাদ। এখানে ঝুলন্ত সেতু ( বেইলি ব্রিজ ) তৈরি করা না হলে দুই পাশের যোগাযোগ কোনও ভাবেই নতুন করে সম্ভব নয়। বেইলি ব্রিজ তৈরি করতে বেশ কিছু সময় লাগবে। তাই মেঘালয়ের ইস্ট জয়ন্তিয়া হিলস প্রশাসন এই ভয়ানক জায়গা দিয়ে পারাপার করতে কিছুটা নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে।
এই পরিস্থিতিতে ৬ নম্বর জাতীয় সড়কে দাড়িয়ে থাকা যানবাহনের মধ্যে আবদ্ধ লোকদের মধ্যে লেগেছে হাহাকার অবস্থা। অনেক কষ্টে হেঁটে হেঁটে এই জায়গা পারাপার করছেন ভুক্তভোগী মানুষরা। ইতিমধ্যে বরাক উপত্যকায় নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম আকাশছোঁয়া হচ্ছে। দেখা দিচ্ছে জ্বালানি সঙ্কট।
বরাক-ত্রিপুরার সঙ্গে ভারতের অন্য অংশের রেল যোগাযোগ এক মাস ধরে বিচ্ছিন্ন। আসামের ডিমা হাছাও জেলার নিউ হাফলং রেল স্টেশন ট্রেন এবং ইঞ্জিন সহ মে মাসে ধসের নিচে চাপা পড়ে যায়। বৃষ্টি চলতে থাকায় সেই লাইনের সংস্কার কাজে হাত দেওয়া যায়নি। গত চারদিন ধরে একটানা বৃষ্টি চলতে থাকায় করিমগঞ্জ জেলা দ্বিতীয় দফায় বন্যার কবলে পড়েছে।