বিয়ানীবাজারে জমি নিয়ে বিরোধে ১জন খুন
প্রকাশিত হয়েছে : ৩:২৬:৩৫,অপরাহ্ন ২৩ জুন ২০১৬ | সংবাদটি ৯৮৫ বার পঠিত
পুলিশের উপস্থিতিতে বিয়ানীবাজারে জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে দু’পক্ষের মধ্যকার সংঘর্ষে প্রতিপক্ষের দায়ের কুপে এক ব্যক্তি খুন হয়েছেন। বুধবার সকাল ১১টার দিকে উপজেলার আলীনগর ইউনিয়নে এ সংঘর্ষে ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে উভয় পক্ষের আরও ১০ জন আহত হয়েছেন বলে জানাগেছে।
নিহতের পরিবার থেকে অভিযোগ করা হয়েছে, মঙ্গলবার রাতে আগাম জমি দখলের পায়তারার খবর থানা পুলিশকে অবহিত করা হয় কিন্তুু ওসি পর্যাপ্ত সংখ্যক পুলিশ সেখানে প্রেরণ না করে চারখাই পুলিশ ফাঁড়ি থেকে ক’জন পুলিশ প্রেরণ করেন। আর সংঘর্ষ চলাকালে স্পল্প সংখ্যক পুলিশ কার্যকর ভূমিকা পালনে ব্যর্থ হওয়ায় তাদের সামনেই ঘটেছে খুনের ঘটনা।
পুলিশের দায়িত্বশীল একটি সূত্র মঙ্গলবার রাতে আলীনগর থেকে তাদেরকে সংঘর্ষের আশংকা করে ফোন করে পুলিশের সহযোগিতা চাওয়া হয়েছিল বলে জানায়। সূত্রটি জানায়, ফোন পাওয়ার পর ওসিকে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য বলা হলেও ওসি এ বিষয়ে তেমন পাত্তা দেন নি।
তবে অন্য একটি সূত্র জানিয়েছে, চারখাই থেকে সংঘর্ষের খবর পেয়ে একদল পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনার চেষ্ঠা করলেও তাদের চোখের সামনে দায়ের কুপে প্রাণ হারান দিন মজুর মাহতাব। হামলাকারীদের তান্ডব দেখে উত্তেজিত জনতা হামলাকারীদের ধাওয়া করেন। এ সময় পুলিশ নিরাপদে সরে যায়। পরে বিয়ানীবাজার থেকে একদল পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে। এবং ঘটনার সাথে জড়িত সন্দেহে মহিলাসহ ৮জনকে আটক করে। বিকেলে এ রিপোর্ট লেখার সময় পর্যন্ত এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে।
জানা যায়, পূর্ব আলীনগরের দু’পক্ষের মধ্যে দীর্ঘ দিন থেকে জমি সংক্রান্ত বিরোধ চলে আসছিল। এরই জের ধরে মামলাও হয়। প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে প্রভাবশালী সুমন ও রুবেল বিভিন্ন ভাবে মামলা দিয়ে হয়রানী শুরু করে। এরই মধ্যে মঙ্গলবার সুমন ও রুবেলের পক্ষ প্রতিপক্ষ দিনমজুর মাহতাবদের জমি দখলের পূর্ব ঘোষণা দেয়। ঘোষণা মোতাবেক বুধবার তারা জমি দখল নিতে এলে মাহতাব উদ্দিনগং বাধা দেন। এ নিয়ে উভয় পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন।। এক পর্যায়ে সুমনগংরা রাম দা দিয়ে মাহতাবকে কোপ দিলে তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। রক্তাক্ত অবস্থায় মাহতাবকে উদ্ধার করে সিলেট নিয়ে যাওয়ার পথে হেতিমগঞ্জ এলাকায় মাহতাব উদ্দিনের (৪৫) মৃত্যু ঘটে। তিনি আলীনগর গ্রামের মখন মিয়ার পুত্র।
ঘটনার পর পর সুমন ও তার সহযোগিরা পালিয়ে বাড়িতে আশ্রয় নিলে এলাকাবাসী তাদের বাড়ী ঘেরাও করে রাখেন। থানা পুলিশ পরবর্তীতে বাড়িতে অভিযান চালিয়ে হত্যাকারী দু’জনসহ ৮ জনকে আটক করেছে। আটককৃতরা হলো, আলীনগর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মুমিত সুমন (৩০), আব্দুল মুমিন লিমন (৩২) ও রাজন (২৮) তারা মৃত সিকই মিয়ার পুত্র। তুতাই মিয়ার পুত্র রুবেল আহমদ (২৪), মৃত ছিদ্দিক আলীর পুত্র ফাত্তাহ (৫৫), মৃত অলিউর রহমান চৌধুরীর পুত্র রায়হানুর রেজা চৌধুরী (৩৮) ও মৃত খদর আলীর পুত্র শাকিল (৩৫), সেবু মিয়ার কন্যা পারভীন বেগম (২২)।
বিয়ানীবাজার থানার ওসি তদন্ত আবুল বাশার বদরুজ্জামান বলেন, মঙ্গলবার ফোনে আগাম সংঘর্ষের খবর পেয়ে ওসি (সার্বিক) সাহেবকে জানিয়ে ছিলাম। তিনি বলেন, খুনের ঘটনায় ৮ জনকে পুলিশ আটক করেছে। এ ব্যাপারে থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুুতি চলছে।
এলাকাবাসী জানিয়েছেন, পুলিশ আগাম ব্যবস্থা গ্রহণ করলে পবিত্র এ মাসে একটি খুনের ঘটনা ঘটতো না।
সুত্র: স্থানীয় সংবাদপত্র