ইতেকাফের তাৎপর্য
প্রকাশিত হয়েছে : ৫:৫৭:৫৬,অপরাহ্ন ২৭ জুন ২০১৬ | সংবাদটি ১০২৬ বার পঠিত
রমজানের শেষ দশকের গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত ইতেকাফ। ইতেকাফ শব্দটি আরবি। এর অর্থ অবস্থান করা, বসা, বিশ্রাম করা, ইবাদত করা ইত্যাদি। আল্লাহ তায়ালার নৈকট্য লাভের জন্য রমজান মাসের একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে পুরুষরা মসজিদে, মহিলারা নিজেদের ঘরে অবস্থান করাকে ইতেকাফ বলে। ইতেকাফ যেকোনো সময় করা যায়। তবে রমজানের শেষ ১০ দিন ইতেকাফ করা সুন্নত। ইতেকাফের মাধ্যমে রোজাদার ব্যক্তি আল্লাহর নৈকট্য লাভের সুযোগ পেয়ে থাকেন। ইতেকাফের মূল উদ্দেশ্য, দুনিয়ার সব সম্পর্ক ছিন্ন করে আধ্যাত্মিক উৎকর্ষ সাধনের মাধ্যমে আল্লাহ তায়ালার নৈকট্য লাভ করা। মসজিদ এলাকার কিছুসংখ্যক লোক ইতেকাফ করলে সবার পক্ষ থেকেই আদায় হয়ে যাবে। কিন্তু কেউই যদি আদায় না করে তবে সবাই গোনাহগার হবে। হযরত আয়েশা (রা.) বলেন, রাসুল (সা.) সব সময় রমজানের শেষ ১০ দিন ইতেকাফ করতেন।
ইতেকাফ আল্লাহর নৈকট্য লাভের সুবর্ণ সুযোগ। লাইলাতুল কদরের পূর্ণ ফজিলত পাওয়ার উদ্দেশে মাহে রমজানের শেষ ১০ দিন ইতেকাফ করা হয়। যিনি যত বেশি গভীরভাবে আল্লাহকে ভালোবাসার জন্য আত্মনিয়োগ করবেন, তিনি তত বেশি আল্লাহর নৈকট্য লাভে সক্ষম হবেন। ইতেকাফ মানুষের ওপর এমন আধ্যাত্মিক প্রভাব সৃষ্টি করে, যার মাধ্যমে তাকওয়া অর্জন হয়। ইতেকাফ মুমিন মুত্তাকিনদের জীবনের মুক্তির বিশেষ পাথেয়। হজরত আনাস (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) প্রতি রমজানের শেষ ১০ দিন ইতেকাফ করতেন। এক বছর কোনো বিশেষ কারণে ইতেকাফ করতে পারেননি, তাই পরবর্তী বছর শেষ ও মধ্যবর্তী দু’দশকসহ মোট ২০ দিন ইতেকাফ করেছিলেন। রাসুল (সা.) বলেন, যে ব্যক্তি মাহে রমজানের শেষ ১০ দিন ইতেকাফ করবে, তাকে এক ওমরা পরিমাণে সওয়াব দেয়া হবে। অপর হাদিসে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেন, যে ব্যক্তি মাহে রমজানের শেষ ১০ দিন ইতেকাফ করবে, তার আমলনামায় দুটো হজ বা দুটো ওমরা হজের সওয়াব লেখে দেয়া হবে। অন্য হাদিসে বর্ণিত আছে, ‘যে ব্যক্তি সারাজীবনে এক দিনের জন্য হলেও ইতেকাফ করবে কেয়ামতের দিন তার থেকে দোযখ ১৫শ বছরের পথ দূরে থাকবে।’
ইতেকাফ এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ ও ফজিলতময় ইবাদত যার মাধ্যমে আল্লাহর সঙ্গে বান্দার গভীর সুসম্পর্ক গড়ে ওঠে। দুনিয়ার সব সম্পর্ক ছিন্ন করে আল্লাহকে পাওয়ার জন্য তার ধ্যানে গভীরভাবে আত্মনিয়োগ করা যায় ইতেকাফে।