- প্রচ্ছদ
- জকিগঞ্জবার্তা
- জকিগঞ্জে দীর্ঘ ৫৬ বছর পর ইমামকে রাজকীয় বিদায় সংবর্ধনা
জকিগঞ্জে দীর্ঘ ৫৬ বছর পর ইমামকে রাজকীয় বিদায় সংবর্ধনা
প্রকাশিত হয়েছে : ৫:১৩:১৬,অপরাহ্ন ০৫ মার্চ ২০২৪ | সংবাদটি ৩০ বার পঠিত
জকিগঞ্জ প্রতিনিধি
মাওলানা মাহমুদুর রহমান বড় হুজুর ছিলেন বয়সে তরুণ। সেই থেকেই সিলেটের জকিগঞ্জ উপজেলার সুপ্রাকান্দি জামে মসজিদের ইমামের দায়িত্ব নেন তিনি। এরপর একে একে কেটে গেছে প্রায় ৬টি দশক। বয়সের ভারে সময় হয়েছে দীর্ঘ ৫৬ বছরের ইমামতি জীবনের ইতি টানার। জীবনের ৮৬ বছর বয়সে এসে অবশেষে ইমামতি অধ্যায়ের সমাপ্তি হয়েছে তার। তবে প্রিয় ইমামের বিদায়কেও স্মরণীয় করে রাখতে ভুল করেননি মুসল্লিরা। বিদায় বেলায় প্রিয় ইমামকে দিয়েছেন রাজকীয় সংবর্ধনা। সবশেষ সোমবার ইমামতি জীবনের ইতি টানেন। এ উপলক্ষে বিদায় সংবর্ধনা সভায় বক্তব্য দেন মাওলানা আব্দুল গফফার রায়পুরী, মাওলানা শাহ নজরুল ইসলাম, মুফতি আবুল হাসান, বড় হুজুরের বড় ছেলে হাফেজ মাওলানা আব্দুল হান্নান, দ্বিতীয় ছেলে মাওলানা আব্দুল কাইয়ুম।
অনেক মুসল্লি এ সংবর্ধনায় সমবেত হন। এ সময় অশ্রুসিক্ত নয়নে প্রিয় ইমামকে বিদায় জানান তারা। মাওলানা মাহমুদুর রহমান বড় হুজুরের বাড়ি একই উপজেলার খলাছড়া ইউনিয়নের লোহারমহল গ্রামে। ছয় ছেলে, তিন মেয়ে এবং স্ত্রীকে নিয়ে তার সংসার। ছয় ছেলের পাঁচ ছেলে আলেম হাফেজ, এক ছেলে কলেজে শিক্ষা জীবন শেষে প্রবাসে রয়েছেন। এছাড়া নাতিরাও আলেম এবং হাফেজ।
সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে একাধিক ক্রেস্ট, নগদ দেড় লাখ টাকা সহ নানা উপহার তুলে দেয়া হয় তাঁর হাতে। এ সময় মুসল্লিদের ফুলেল শুভেচ্ছায় সিক্ত হন ইমাম। পরে তারা প্রিয় ইমামকে বাড়ি পৌঁছে দিয়েছেন সুসজ্জিত গাড়ি দিয়ে। এ সময় মোটরশোভাযাত্রা সহকারে বিপুলসংখ্যক মানুষের উপস্থিতিতে মিছিলে মিছিলে পুরো এলাকা প্রকম্পিত হয়ে ওঠে।
ইমামতির শুরুতে তিনি সম্মানি পেতেন ৩৫ টাকা আর সবশেষ তিনি মাসিক সম্মানি পেতেন সাড়ে তিন হাজার টাকা। তিনি স্থানীয় ঈদগাহ বাজার মাদ্রাসার মুহতামিম ছিলেন দীর্ঘ ৩৮ বছর। দলমতনির্বিশেষে তিনি এলাকায় একজন সর্বজন শ্রদ্ধেয় ব্যক্তিত্ব। প্রিয় ইমামের প্রতি শ্রদ্ধা, সম্মান জানাতে নানা আয়োজন ছিল। যিনি এলাকায় সকলের কাছে বড় হুজুর হিসেবে ব্যাপক সমাদৃত, জনপ্রিয়। তিনি বলেন, আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য সব সময় সততার সঙ্গে দায়িত্ব ও কর্তব্য পালনের চেষ্টা করেছি। কখনো ভাবিনি আমার বিদায়টা এত সম্মানের হবে। আমি এমন উদ্যোগের জন্য মসজিদের মুসল্লি, এলাকার ছাত্র-যুব সমাজ, প্রবাসী, ব্যবসায়ীসহ সর্বস্তরের মানুষের প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি। সত্য বলতে কী আমি আবেগাপ্লুত। আমি সবার জন্য দোয়া করি। আপনারাও আমার জন্য দোয়া করবেন।