নামে সরকারি হলেও বাশ-বেতের ভাঙ্গা স্কুলে পাঠদান, ২০বছর ধরে বেতন নেই শিক্ষকদের. দেখার কেউ নেই
প্রকাশিত হয়েছে : ৯:১৫:২৯,অপরাহ্ন ১৫ মে ২০১৬ | সংবাদটি ৭০২ বার পঠিত
নিজস্ব প্রতিবেদক: এ কেমন স্কুল, নামে সরকারি-কাজে কিছুই নেই। মারাত্মক ভাঙ্গা-জরাজীর্ণ স্কুলে শিক্ষার্থীদের পাঠদান করানো হচ্ছে। অন্যদিকে শিক্ষকরা বিনা বেতনে দীর্ঘ ২০বছর ধরে দায়িত্ব পালন করছেন। অবস্থা দৃষ্টে মনে হচ্ছে স্কুলটি দেখার কেউ নেই। সেই স্কুল হচ্ছে জকিগঞ্জের বিরশ্রী ইউনিয়নের লিয়াকতপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। ১৯৯৬সালে ৩৩শতক ভূমিতে স্কুলটি প্রতিষ্ঠা করেন এলাকার একজন মহৎপ্রাণ ব্যক্তি।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বাশ-বেতের ভাঙ্গা স্কুলটির একটি কক্ষের চালা সম্প্রতি ঝড়-তুফানে উড়িয়ে নিয়ে যায়। কখনও রোদ, কখনও বৃষ্টির মধ্যে সেই কক্ষে পঞ্চম শ্রেণীর ক্লাস নেন শিক্ষকরা। খোলা আকাশের নীচে ক্লাস নিতে গিয়ে সীমাহীন দূর্ভোগ পোহাচ্ছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। অফিস কক্ষে আসবাবপত্র নেই। যত্রতত্র ফাইল পত্র রাখা হয়েছে। পুরো স্কুলটি এলোমেলো অবস্থায় চলছে। শিক্ষকরা জানান, যখন বৃষ্টি আসে, তখন আমাদের অনায়াসে ভিজতে হয়। টিনের ছিদ্র দিয়ে সব গুলো কক্ষে পানি পড়ে। বাশ-বেতের বেড়া গুলো ভাঙ্গা। সব মিলিয়ে পুরো স্কুলটি সমস্যায় জর্জরিত। যে কেউ দেখলে বিশ্বাস করতে পারবেন না, যে এটি একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান! স্কুলের সমস্যা সমাধানে সরকারের কোনো পদক্ষেপ নেই।এমনকি এলাকাবাসীরও তেমন উদ্যোগ নেই। তবে স্কুল প্রতিষ্ঠাতা ও কমিটির সংশ্লিষ্ট কেউ কেউ অতীতে সহযোগিতা করলেও এখন তারা উদাসীন। তবে এতো কিছুর পরও পঞ্চম শ্রেণীর সমাপনী পরীক্ষায় স্কুলের শিক্ষার্থীরা ভালো ফলাফল করেছে বলে জানা গেছে। কিন্তু এতো করুন অবস্থা আর কোনো স্কুলে আছে বলে মনে হয় না।
প্রধান শিক্ষক আব্দুল মুকিত জকিগঞ্জ বার্তা টুয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান স্কুলটি পাকা করণ করা অতীব জরুরী। এ দূরবস্থার মধ্যে প্রতিদিন ক্লাস নেওয়া হচ্ছে শিক্ষার্থীদের। আমিসহ আরও দু’জন মহিলা শিক্ষক রয়েছি। কিন্তু ২০বছর ধরে বেতন নেই। এলাকাবাসী গত তিন-চার বছর ধরে ন্যূনতম বেতন-ভাতা দিচ্ছেন না। এমতাবস্থায় আর কত কষ্ট করতে হবে আমাদের। স্কুল পরিচালনা কমিটির সভাপতি মতিউর রহমান চৌধুরী বলেন স্কুলের সার্বিক সমস্যা পরিবর্তনের লক্ষ্যে আমরা শিগগির উদ্যোগ নেবো। উপজেলা শিক্ষা অফিসার মো: রফিজ মিয়া জকিগঞ্জ বার্তা টুয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান স্কুলের এতো সমস্যা আমাকে কেউ জানায়নি। স্কুলটি ভিজিট করে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়া হবে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ মোবাশশেরুল ইসলাম জকিগঞ্জ বার্তা টুয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান স্কুলের বিষয়ে উপজেলা শিক্ষা অফিসার আমাকে কিছুই জানাননি। উপজেলা শিক্ষা অফিসারকে স্কুলের বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হবে।