সমস্যার অন্ত নেই সোনাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের
প্রকাশিত হয়েছে : ৮:৪৬:২০,অপরাহ্ন ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ | সংবাদটি ১১৯৩ বার পঠিত
এনামুল হক মুন্না সম্পাদক জকিগঞ্জ বার্তা: সমস্যায় জর্জরিত জকিগঞ্জের কাজলসার ইউনিয়নের সোনাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। শিক্ষক সংকট, মারাত্মক জরাজীর্ণ টিনসেড ভবন, ডেস্ক-বেঞ্চের অভাব, অফিসে নেই আসবাবপত্র সব মিলিয়ে সমস্যার অন্ত নেই বিদ্যালয়ে। মাত্র দু’জন শিক্ষক পাঠদান করছেন। প্রধান শিক্ষকের পদ শুন্য গত ১ বছর থেকে। এলাকাবাসী ও স্থানীয় শিক্ষকের বেতনে ১জন প্যারা শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। একদিকে পশ্চাৎপদ, দরিদ্র এলাকা। যেখানে রাস্তা-ঘাটের সমস্যা খুবই প্রকট। বর্ষাকালে নৌকা যোগে যাতায়াত করতে হয়। সরেজমিনে স্কুল পরিদর্শনে গিয়ে দেখা যায় বিদ্যালয়ের নানাবিধ সমস্যা। বিদ্যালয়ের শুভাখাংকী বালাউট গ্রামের মাওলানা মাশুকুর রহমান মারুফ এ প্রতিবেদককে (জকিগঞ্জ বার্তা সম্পাদক এনামুল হক মুন্না) সম্প্রতি বিদ্যালয়ের চরম দুরবস্থা দেখান।
তিনি জকিগঞ্জ বার্তাকে বলেন এলাকায় বিদ্যুতের কাজে সহায়তা করতে গিয়ে বিদ্যালয়ের সমস্যা চোখে পড়ে।সমস্যা অনেক থা্কায় সমাধানের পথ বের করতে সাংবাদিকদের দ্বারস্থ হতে হয়েছে। ঝুকিপূর্ণ টিনসেড বিল্ডিংটি যে কোনো মূহুর্তে ভেঙ্গে পড়তে পারে। ডিজিটাল যুগে এমন বিল্ডিংযে লেখাপড়া দূরের কথা, গরুর গোয়াল ঘর হবে না। অথচ শত শত কচি শিক্ষার্থী ও শিক্ষকগণের জীবন বিপন্ন হতে পারে। শিক্ষক সংকটের কারণে লেখাপড়ায় মারাত্মক ব্যাঘাত ঘটছে।অবিলম্বে বিদ্যালয়ের সার্বিক সমস্যা সমাধানে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের জোর দাবি জানান তিনি। বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি হেলাল আহমদ জানান প্রায় ১বছর থেকে প্রধান শিক্ষক পদ শুন্য। শিক্ষক সংকট ও ডেস্ক-বেঞ্চ অপ্রতুল। শিক্ষার্থীরা ভাঙ্গা ডেস্ক-বেঞ্চে বসে লেখাপড়া করছে। অনেককে দাড়িয়ে থাকতে হয়।
ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ছাবিল তাহুরা জানান ১৯৫৫সালে ৬৪শতক জায়গার উপর প্রতিষ্ঠিত এ বিদ্যালয়ে ২১৭জন শিক্ষার্থী রয়েছে। তন্মধ্যে ছাত্র ১০২ ও ছাত্রী ১১৫জন। অথচ শিক্ষক মাত্র দু’জন। প্রতিদিন অনেক কষ্ট করে প্রায় ১৫ কি: মি: পথ পাড়ি দিয়ে বিদ্যালয়ে আসতে হয়। রাস্তা-ঘাট ভালো না থাকায় যাতায়াতে দূর্ভোগ পোহাতে হয়। কিন্তু বিদ্যালয়ের সমস্যা গুলো সমাধান হচ্ছে না। এতো প্রতিকুল অবস্থার পরও গত সমাপনী পরীক্ষায় শতভাগ ফলাফল অর্জিত হয়েছে। ভাঙ্গাচুড়া দরজা, জানালা, ডেস্ক-বেঞ্চ। অফিসের আসবাবপত্র নেই। যে কোনো মূহুর্তে ভেঙ্গে যেতে পারে জরাজীর্ণ টিনসেডটি। বৃষ্টির দিনে টিনের চালফুটো হয়ে পানি পড়ে। বাস যোগ্য নয় এমন ঘরে বাধ্য হয়ে আমাদের থাকতে হচ্ছে। শৌচাগার ব্যবহার যোগ্য নয়। সব মিলিয়ে বিদ্যালয়ের সমস্যা অনেক।তাই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যত চিন্তা করে উল্লেখযোগ্য সমস্যা সমাধানে এগিয়ে আসার অনুরোধ জানান তিনি।
সোনাপুর গ্রামের মুজম্মিল আলী, মাওলানা আবুল কালাম, লামাশাহপুর গ্রামের আব্দুস ছাত্তার, মুহিবুর রহমান জানান বর্ষাকালে রাস্তা-ঘাট পানিতে ডুবে যাওয়ার কারণে নৌকাই যাতায়াতের একমাত্র পথ। প্রায় ৩কি: মি: হেটে যেতে হয় চৌধুরী বাজারে। ২০০০মানুষের বসবাস ৯নং ওয়ার্ডে অবস্থিত সোনাপুর সরকারি প্রাখমিক বিদ্যালয়ের সমস্যা গুলো নিরসনে এগিয়ে আসতে সংশ্লিষ্টদের প্রতি জোর দাবি জানান তারা। উপজেলা শিক্ষা অফিসার মো: রুফিজ মিয়া জকিগঞ্জ বার্তাকে বলেন বিদ্যালয়ের সমস্যা গুলো আমার জানা আছে। সীমাবদ্ধতার কথা জানিয়ে বলেন উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করে সমস্যা সমাধানের পথ বের করা হবে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ মোবাশশেরুল ইসলাম জকিগঞ্জ বার্তাকে বলেন বিদ্যালয়ের সমস্যা অবগত হবার পর পরই সংশ্লিষ্ট বিভাগকে পদক্ষেপ নিতে বলা হয়েছে। সুযোগ পেলে বিদ্যালয় পরিদর্শনে যাবার কথা জানান তিনি। উপজেলা চেয়ারম্যান ইকবাল আহমদ জকিগঞ্জ বার্তাকে বলেন শিগগির বিদ্যালয় পরিদর্শনে যাবো।