অবিশ্বাস্য জয়ে ফের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ওয়েস্ট ইন্ডিজ
প্রকাশিত হয়েছে : ১১:৪৫:৪৪,অপরাহ্ন ০৩ এপ্রিল ২০১৬ | সংবাদটি ৯৮৩ বার পঠিত
১৫৬ রানের টার্গেট নিয়ে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই বিপদে পড়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। মাত্র ১১ রানের মাথায় হারাতে হয় তিন উইকেট। একে একে ফিরে গেছেন ক্রিস গেইল (৪), চালর্স (১), জো রুট (০)। প্রথমে জোড়া আঘাত হানেন জো রুট। এরপর সিমন্সকে ফেরান উইলি। শুরুর এই বিপদ থেকে দলকে টেনে তোলার চেষ্টা চালিয়ে যান ডোয়েন ব্রাভো ও মারলন স্যামুয়েলস।তাতে বেশ খানিকটা সফলও তারা।৭৫ রান তুলে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে লড়াইয়ে ফিরিয়ে আনেন তারাই।
কিন্তু ২৫ রানে ব্রাভো ও ১ রান করে স্যামি আউট হয়ে গেলে আবার চাপে পড়ে যায় ক্যারিবিয়ানরা। অধিনায়ক স্যামির ব্যাটে কিছু রান থাকে সাধারণত।কিন্তু এদিন দলকে আরো বিপদে ফেলে ফিরে যান ২ রানে। উইকেট পড়তে থাকলেও অভিজ্ঞ ও লড়াকু মারলন স্যামুয়েলস আশা দেখাচ্ছিলেন ওয়েস্ট ইন্ডিজকে। উইকেটে শুধু টিকেই থাকেননি, সঙ্গে রান করেও গেছেন সমানে।
শেষ দুই ওভারে ওয়েস্ট ইন্ডিজের দরকার ২৭ রান, হাতে ৪ উইকেট। জর্ডানের ১৯তম ওভারে আসলো মাত্র ৮ রান। তাই সমীকরণটাও কঠিন হয়ে যায় ওয়েস্ট ইন্ডিজের। শেষ ৬ বলে ১৯ রান দরকার ছিল তাদের। বল করতে আসেন বেন স্টোক। উইকেটে কার্লোস ব্রাথওয়েইট। সম্ভব হবে তো? এই যখন প্রশ্ন তখন প্রথম চার বলে টানা ছ্ক্কা হাঁকিয়ে দলকে নাটকীয় ও ঐতিহাসিক জয়ে পৌঁছে দেন ব্রাথওয়েইট।
এরআগে ইডেন গার্ডেন্সে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ৯ উইকেটে ১৫৫ রান করে ইংল্যান্ড।টসে জিতে বোলিং করার সিদ্ধান্তটা সঠিক প্রমাণ করে দ্বিতীয় বলেই উইকেট নিলেন স্পিনার স্যামুয়েল বদ্রি। ইংল্যান্ডকে ব্যাটিংয়ে পাঠিয়ে অধিনায়ক ড্যারেন স্যামি পেসার নয়, বল তুলে দিলেন স্পিনার বদ্রির হাতে। অধিনায়কের আস্থার মূল্য দিতে মোটেও দেরি করলেন না এ স্পিনার।
দারুণ এক স্যুয়িয়ে ওপেনার জেসন রয়ের লেগ স্ট্যাম্প উপড়ে ফেলেন বদ্রি। শুরুর এ ধাক্কা সামলে ঘুরে দাঁড়ানোর দরকার ছিল ইংল্যান্ডের।কিন্তু সেটা হয়নি। পরের ওভারে পঞ্চম বলেই ব্যক্তিগত ১ রানে আন্দ্রে রাসালের বলে বিপদ আরো বাড়িয়ে ফিরে যান হলস। মাত্র ৮ রানে নেই ২ উইকেট।এ বিপদ থেকে দলকে তুলে আনার চেষ্টা চালান দুই অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান জো রুট ও ইয়ান মরগান।
কিন্তু তাতেও সফল হয়নি ইংল্যান্ড। অধিনায়ক মরগানকে মাত্র ৫ রানে ফিরিয়ে দিয়ে ইংলিশদের আরো বিপদে ফেলে দেন সেই বদ্রি। কিন্তু বলে কথা। তাদের ভালো করে জানা কীভবে বিপদ সালাতে হয়। মরগান না পারলেও পেরেছেন জো রুট বাটলার জুটি।
মাত্র ২৩ রানে ৩ উইকেট হারানো ইংল্যান্ড ঘুরে দাঁড়ায় জো রুট ও বাটলারের দৃঢ়তায়। ৬১ রানের মূল্যবান জুটি গড়েন তারা। বাটলার খুবই আক্রমণাত্মক হয়ে উঠছিলেন। আরও কিছুক্ষণ উইকেটে থাকলে দ্রুত রান বাড়িয়ে নিতে পারত ইংল্যান্ড। কিন্তু ২২ বলে ৩৬ করে ফিরে যেতে হয় বিপজ্জনক হয়ে ওঠা বাটলারকে। তবে ততক্ষণে ৩ উইকেটে ২৩ থেকে ইংল্যান্ডের স্কোর চলে যায় ৮৪তে।
দারুণ ফর্মে থাকা জো রুট ক্রমেই ভয়ানক হতে থাকেন। ৫০ রান পূরণ করেন ৩৩ বলে। ইংল্যান্ডের স্কোর তখন ১২.৪ ওভারে ৪ উইকেটে ৯৭। মানে শুরুর ধাক্কা সামলে বড় স্কোরের সম্ভাবনা জানান দেয় ইংল্যান্ড।কিন্তু ক্রিকেট এতটাই অনিশ্চয়তার খেলা যে, দৃশ্যপট পাল্টাতে সময় লাগেনা।
অল্প সময়ের মধ্যে তিন উইকেট পড়ে যাওয়ায় ফের বিপদে পড়ে যায় ইংল্যান্ড। একে একে ফিরে যান রুট (৫৪), স্টোক (১৭) এবং মঈন আলী (০)। ১১১ রানে পড়ে যায় ৭ উইকেট। কতদূর আর যেতে পারবে ইংল্যান্ড? ১৩০-১৩৫?
না, অনুমানের চেয়ে একটু বেশিই যেন করে ফেললো ইংল্যান্ড। শেষ দিকে উইলি ও জর্ডানের দৃঢ়তায় ইংলিশদের সংগ্রহ দাঁড়ায় ১৫৫ রান।
ইংল্যান্ডের পক্ষে ব্রাভো ও ব্রার্থওয়াইট ৩টি করে উইকেট নেন।