ভয়াবহ শিলাবৃষ্টিতে ৩হাজার ঘর-বাড়ি, সবজি ও গাছ পালা বিধ্বস্থ; আহত ১৫, কোটি কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি
প্রকাশিত হয়েছে : ২:৪১:৩২,অপরাহ্ন ২১ এপ্রিল ২০১৬ | সংবাদটি ৭৪০ বার পঠিত
নিজস্ব প্রতিবেদক: জকিগঞ্জের কয়েকটি গ্রামে শিলাবৃষ্টিতে প্রায় ৩হাজার ঘর বাড়ি-বিধ্বস্থ ও দু’হাজার বিঘা নানা ধরনের সবজি বিনষ্ট; আহত ১৫জনসহ কোটি কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। আজ সোমবার সকাল হতে সন্ধ্যা পর্যন্ত উপজেলা চেয়ারম্যান ইকবাল আহমদ ও জকিগঞ্জ বার্তা টুয়েন্টিফোর ডটকমের সম্পাদক এনামুল হক মুন্না সরেজমিনে উপস্থিত হয়ে ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারের লোকজনের সাথে কথা বলেন।
বারঠাকুরী ইউনিয়নের বারঠাকুরী, নিজগ্রাম, কাসিরচক, বাগপাড়া, মানিকপুর ইউনিয়নের রসুলপুর, সুনানন্দপুর, মাতারগ্রাম, হরাইত্রিলোচন ও সারংদেব গ্রাম গুলোর পরিবার ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। তবে বারঠাকুরীর ইউপির গ্রাম গুলো সব চেয়ে বেশি ক্ষতির শিকার হয়েছেন। গত শুক্রবার দিবারাত ১১টায় মানিকপুর ইউপিতে এবং শনিবার সন্ধ্যার কিছুক্ষণ আগে বারঠাকুরীতে ভয়াবহ শিলাবৃষ্টিতে ঘর বাড়ি, গাছ-পালা, সবজি বিধ্বস্ত হয়ে গেছে। উপজেলা চেয়ারম্যান, এ প্রতিবেদকসহ এলাকার শত শত ক্ষতিগ্রস্থ মানুষেরা সেদিনের ভয়ংকর স্মৃতিচারণ করেন। কেউ কেউ বলতে গিয়ে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। বলেন কেজি-দেড়কেজি ওজনের একেকটি ধারালো শিলার আঘাতে টিন কেটে আমাদের উপর পড়েছে। জীবন বাচাতে খাট বা পালংকের নীচে পরিবারের সকলেই আশ্রয় নিয়ে আল্লাহকে ডাকতে থাকি। আদা ঘন্টার শিলা বৃষ্টি শেষে বের হয়ে দেখি টিনের চাল বড় বড় ছিদ্র হয়ে অবিরাম বৃষ্টি পড়ছে। ঐ গ্রাম গুলোর ধনী-গরীব সকলের টিনের চাল নষ্ট হওয়াতে রাতে ঘুমাতে পারছেন না। বিরুপ আবহাওয়ার কারণে সামর্থবানরা টিন কিনে আনতে পারেননি। আবার কেউ কেউ কিনে আনলেও মেস্ত্রীর অভাবে চালে লাগাতে পারছেন না। প্রতিটি পরিবারের সকলেই রাত জেগে থাকেন। অনেকেই কাজে না গিয়ে বাড়িতে থাকায় অনাহারে-অর্ধাহারে জীবন-যাপন করছেন। সত্তোর্ধ এক বৃদ্ধ বলেন, আমার জীবনে এতাে মারাত্মক শিলা চোখে দেখিনি।
নদীর চর, দিঘীর পারসহ বিভিন্ন জমিতে টমেটো, বেগুন, লুবি, মরিচ, মিষ্টি লাউ, বাধা কপি,চিচিংগা, করোলা, কুমড়া ধ্বংস হয়ে মাটিতে মিশে যায়। সরেজমিনে দেখা যায় এসব সবজি চাষীরা চরম দূর্যোগে পড়েছেন। কেউ কেউ সব হারিয়ে চরম নি:স্ব ও বিষন্ন। উপজেলা চেয়ারম্যান সিলেটের জেলা প্রশাসক জয়নাল আবেদীনের সাথে কথা বলে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে অনুরোধ জানান। উপজেলা চেয়ারম্যান ক্ষতিগ্রস্থ মানুষকে সহানুভূতি জানিয়ে তাদের স্বান্তনা দেন। এবং প্রয়োজনীয় সহযোগিতা দিতে যা যা করার তার সবই করা হবে বলে তিনি সকলকে আশ্বস্থ করেন। উপজেলা চেয়ারম্যানকে কাছে পেয়ে ক্ষতিগ্রস্থ মানুষেরা আবেগ-আপ্লুত হয়ে পড়েন। আবার ইউপি চেয়ারম্যান মহসনি মর্তুজা চৌধুরী টিপু তাদের এলাকায় না আসায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন কেউ কেউ।
ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ মোবাশশেরুল ইসলামকে জিজ্ঞেষ করা হলে তিনি জকিগঞ্জ বার্তাকে জানান, জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে দু’ইউনিয়ন মিলে ৬শ দরিদ্র মানুষের কথা জানিয়েছি। আশা করি যথাশীঘ্র সহযোগিতা আসবে। প্রশাসন থেকে আসা মাত্র ইউপি চেয়ারম্যানদের নিয়ে সেগুলো যাচাই বাছাই করে বন্টন করা হবে।