বাজেটের ৮৬ ভাগ অর্থ গেছে শহরে
প্রকাশিত হয়েছে : ২:০১:৫৬,অপরাহ্ন ১৫ জুন ২০১৬ | সংবাদটি ৭৭৫ বার পঠিত
প্রস্তাবিত ২০১৬-১৭ অর্থবছরের জাতীয় বাজেটে পানি, স্যানিটেশন ও হাইজিন (ওয়াশ) খাতে শহর এবং গ্রামের মধ্যে বিনিয়োগ বৈষম্য ব্যাপকভাবে বেড়েছে বলে মন্তব্য করেছেন জনস্বাস্থ্যখাতে কর্মরত বিভিন্ন উন্নয়ন সংস্থা, দাতা সংস্থা এবং নেটওয়ার্কের প্রতিনিধিরা।
তারা বলছেন, বাজেটে বরাদ্দকৃত অর্থের ৮৬ ভাগই চলে গেছে বড় শহরে। মাথাপিছু বরাদ্দ শহরাঞ্চলে যেখানে ১ হাজার ১২১ টাকা, সেখানে গ্রামাঞ্চলে এই বরাদ্দ মাত্র ৫৫ টাকা। অর্থাৎ গরিবের চেয়ে বেশি অর্থ পেয়েছে বড়লোকেরা।
মঙ্গলবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে আয়োজিত বাজেট পরবর্তী এক সংবাদ সম্মেলনে তারা এ মন্তব্য করেন।
ওয়াটারএইড বাংলাদেশ, হিউম্যান ডেভেলপমেন্ট রিসার্চ সেন্টার, ইউনিসেফ, ওয়াটার সাপ্লাই অ্যান্ড স্যানিটেশন কোলাবোরেটিভ কাউন্সিল, ফ্রেশ ওয়াটার অ্যাকশন নেটওয়ার্ক সাউথ এশিয়া, বাংলাদেশ ওয়াশ অ্যালায়েন্স, বাংলাদেশ ওয়াটার ইন্টিগ্রিটি নেটওয়ার্ক, এন্ড ওয়াটার পোভার্টি এবং এনজিও ফোরাম ফর পাবলিক হেলথ যৌথভাবে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে।
এতে বক্তব্য রাখেন- এন্ড ওয়াটার পোভার্টি’র বাংলাদেশ প্রতিনিধি জোবায়ের হাসান, ওয়াটার এইড বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর ড. খাইরুল ইসলাম, ইউনিসেফের ওয়াস স্পেশালিস্ট মনিরুল আলম, ফ্রেস ওয়াটার অ্যাকশন নেটওয়ার্ক সাউথ এশিয়ার বাংলাদেশ প্রতিনিধি ইয়াকুব হোসেন, দুঃস্থ স্বাস্থ্য কেন্দ্রের নির্বাহী পরিচালক ড. দিবালোক সিংহ, ওয়াশ অ্যালায়েন্স’র বাংলাদেশ প্রতিনিধি অলোক মজুমদার প্রমুখ।
প্রস্তাবিত বাজেট বিশ্লেষণ করে জোবায়ের হাসান বলেন, প্রকল্প সংখ্যা ও বরাদ্দ গত বছরের তুলনায় সামান্য বেড়েছে। তবে সে অর্থে গ্রাম ও শহরের বিনিয়োগ বৈষম্য কমেনি।
তার মতে, বাজেটে দুর্গম এলাকার জনগণের পানি ও স্যানিটেশনের জন্য মাত্র ৫০০ কোটি টাকার অননুমোদিত একটি প্রকল্প রাখা হয়েছে। তবে দুর্গম ও সুবিধাবঞ্চিত পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠী এবং আর্সেনিক উপদ্রুত এলাকার জন্য নতুন তিনটি বিশেষ প্রকল্প প্রস্তাব করা হলেও তা চূড়ান্ত করা হয়নি। উপরন্তু সাইক্লোন উপদ্রুত উপকূলীয় এলাকায় পানি সরবরাহ ও পয়ঃনিষ্কাশনে সরকারি প্রকল্প থাকা সত্ত্বেও বাজেটে কোনো বরাদ্দ রাখা হয়নি।
ধনীদের থেকে এই খাতে গরীবদের জন্য বরাদ্দ খুবই কম উল্লেখ করে জোবায়ের হাসান কিছু সুপারিশ তুলে ধরেন যা শহর এবং গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর ওপর তৈরি হওয়া এই বৈষম্য কমাতে সাহায্য করবে বলে তিনি দাবি করেন।
সংবাদ সম্মেলনে দুঃস্থ স্বাস্থ্য কেন্দ্রের নির্বাহী পরিচালক ড. দিবালোক সিংহ বলেন, ‘বাজেটে পল্লী এবং শহরাঞ্চলের মধ্যে বিরাট পার্থক্য তৈরি করা হয়েছে। বলতে গেলে দরিদ্র্য এলাকার মানুষ কিছুই পাচ্ছে না, বাজেটে নেয়া এ ধরনের পদক্ষেপ আমরা যথার্থ মনে করছি না।’
ওয়াশ অ্যালায়েন্স’র বাংলাদেশ প্রতিনিধি অলোক মজুমদার বলেন, অনেক বরাদ্দ কম পেয়েছেএই খাত। মাথাপিছু মাত্র ৩০৩ টাকা। বৈষম্য আগের থেকে আরো বেড়েছে। এই সামান্য টাকা দিয়ে লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা সম্ভব নয়।
বেসরকারি এই উন্নয়ন সংস্থার প্রতিনিধিরা এ সময় গ্রাম ও শহরের মধ্যে বরাদ্দ বৈষম্য কমিয়ে আনাসহ জেলা শহর, চর, হাওড়, বাওর, পাহাড় ও উপকূলীয় এলাকাসহ গ্রামীণ পর্যায়ে বরাদ্দ আরও বাড়ানোর আহ্বান জানান।