জরুরি অবস্থা জারি ফ্লোরিডায় নৈশক্লাবে রক্তবন্যা, নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৫০
প্রকাশিত হয়েছে : ১:৩৮:৪০,অপরাহ্ন ১৩ জুন ২০১৬ | সংবাদটি ৯৪৭ বার পঠিত
যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডার সমকামীদের একটি নাইটক্লাবে বন্দুকধারীর বেপরোয়া হামলায় নিহত হয়েছেন অন্তত ৫০ জন। নিহতের সংখ্যা আরো বাড়তে পারে। ঘটনার পর পরই নাইটক্লাবটি রক্তে ভেসে যায়। ভেতরে অসংখ্য লাশ ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে থাকে। চারদিকে কান্না আর আর্তনাদের শব্দ। আমেরিকার ইতিহাসে এই হামলাকে জঘন্যতম গণহত্যা হিসাবে অবিহত করছেন অরল্যান্ডো পুলিশ প্রধান জন মিনা।
সিটি মেয়র নগরীতে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছেন। এই হামলায় আহত হয়েছে কমপক্ষে ৫৩ জন। অনেকের অবস্থাই আশঙ্কাজনক। তাদেরকে চিকিৎসার জন্য নিকটবর্তী বিভিন্ন হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। শেষ পর্যন্ত হামলাকারী পুলিশের গুলিতে নিহত হয়েছেন। কিন্ত তার আগে অর্ধশত মানুষ লাশ হয়ে ক্লাবের ভেতরে পড়ে থাকে।পুলিশ প্রধান জন মিনার বরাত দিয়ে এ খবর দিয়েছে বিবিসি ও সিএনএন।
মার্কিন পুলিশ জানিয়েছে, হামলাকারীর নাম ওমর সিদ্দিকী মাতিন(২৯)। ওমর মাতিন আফিগানিস্তান বংশোদ্ভূত মার্কিন নাগরিক। ফ্লোরিডার পোর্ট সেন্ট লুইসে থাকত সে তার বাবা-মায়ের সঙ্গে থাকত।
খবরে বলা হয়েছে, রবিবার স্থানীয় সময় রাত দুইটায় এক বন্দুকধারী অতর্কিতভাবে ফ্লোরিডার পালস ক্লাবে ঢুকে পড়ে এলোপাথারি গুলি করতে শুরু করে।ঘটনাস্থলে উপস্থিত কয়েকজন জানিয়েছেন, তারা অন্তত ৫০ রাউন্ড গুলির শব্দ পেয়েছেন।
ক্রিস্টোফার হ্যানসন নামে একজন জানান, হামলার পর ভিতরে কেবল মানুষের দেহ পড়ে রয়েছে। তিনি বলেন, “পার্কিং লটে তাদের হলুদ বা লাল রঙ দিয়ে চিহ্নিত করা হচ্ছে কার জন্য আগে সহায়তা প্রয়োজন। তাদের কারও প্যান্ট ছিঁড়ে গেছে, কারও গায়ে শার্ট নেই, তাদের শরীরে বুলেটের চিহ্ন। চারদিকে কেবল রক্ত আর রক্ত।”পুলিশ বলছে, ঘটনার প্রায় তিন ঘন্টা পর তারা পালস ক্লাব নামে ওই নাইট ক্লাবটির ভেতরে ঢুকে আক্রমণকারীকে হত্যা করে। বন্দুকধারী লোকটির হাতে এআর-১৫ অ্যাসল্ট রাইফেল এবং হ্যান্ডগান ছিল এবং সে নাইটক্লাবের ভেতরে অনেককে জিম্মি করেছিল। নিহত হবার আগে পুলিশের সঙ্গে তার গুলিবিনিময় হয়।পুলিশ একে একটি ‘সন্ত্রাসবাদী ঘটনা’ বলে আখ্যায়িত করেছে।পুলিশ বলছে, বন্দুকধারী একা ছিল। ঘটনায় হতাহতদের আত্মীয়স্বজনরা হাসপাতালগুলোতে ভিড় জমাচ্ছে।
ওই ক্লাবে থাকা এক ব্যক্তি রিকার্ডো আলমোডোভার পাল্স ক্লাবের ফেসবুক পাতায় লিখেছেন যে স্থানীয় সময় রাত দু’টোয় বন্দুকধারী ভেতেরে ঢুকে এলোপাথারি গুলি ছুড়তে শুরু করে।তিনি লেখেন – “ওই সময় যারা নাচছিল এবং বারের কাছে যারা ছিল সবাই মাথা নীচু করে ফেলে। আর আমরা যারা বারের পিছনের দরজার কাছে ছিলাম তারা কোনরকমে ক্লাব থেকে বের হয়ে দৌড় দেই”।আরও একজন প্রত্যক্ষদর্শী অ্যানথনি টরেস তখন বলেছিলেন যে তিনি মানুষকে চিৎকার করতে শুনেছেন, নাইটক্লাবের অনেকে হয়তো নিহত হয়েছেন।
মাতিনের বাবা মির সিদ্দিকী গণমাধ্যমকে বলেন, “কয়েক মাস আগে মিয়ামিতে দুইজন পুরুষকে চুম্বন করতে দেখে আমার সন্তান ক্রুদ্ধ হয় ওঠে। ধর্মের সঙ্গে এর কোনো সম্পর্ক নেই। আমরা পুরো ঘটনার জন্য ক্ষমাপ্রার্থী। ছেলের কর্মকাণ্ডের ব্যাপারে আমরা অবগত ছিলাম না। পুরো দেশের ন্যায় আমরাও শোকাহত।”