ব্রিফিংয়ে আইএসপিআর রাতেই ২০ জিম্মিকে হত্যা করা হয়
প্রকাশিত হয়েছে : ৪:৩৯:১৬,অপরাহ্ন ০২ জুলাই ২০১৬ | সংবাদটি ৭৬২ বার পঠিত
রাজধানীর গুলশানের হলি আর্টিজান রেস্তোরাঁয় কমান্ডো অভিযানে ৬ বন্দুকধারী নিহত হলেও তার আগে ২০ জিম্মিকে তারা হত্যা করেছে।
শনিবার দুপুরে এক ব্রিফিংয়ে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদফতরের (আইএসপিআর) পক্ষ থেকে এ তথ্য জানানো হয়।
ব্রিফিংয়ে মিলিটারি অপারেশনন্সের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নাঈম আশফাক চৌধুরী বলেন, জিম্মি উদ্ধারে শনিবার অভিযান শেষে ওই রেস্তোরাঁর ভেতরে ২০টি মৃতদেহ পাওয়া গেছে।
তিনি এই ২০ জনের পরিচয় জানাতে পারেনি। তবে নিহতরা প্রায় সবাই বিদেশী বলে পুলিশ কর্মকর্তা জানিয়েছেন।
এ নিয়ে জিম্মি সংকটে নিহতের সংখ্যা মোট ২৮ জনে দাঁড়িয়েছে। এদের মধ্যে গতরাতে অভিযানের সময় বনানী থানার ওসি ও ডিবির একজন কর্মকর্তা গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান।
আর কমান্ডো অভিযানে নিরাপত্তাবাহিনীর গুলিতে শনিবার সকালে নিহত হন ৬ জন বন্দুকধারী। এ সময় এক বন্দুকধারীকে জীবিত আটক করা হয়।
ব্রিফিংয়ে বলা হয়, শুক্রবার রাতে হলি আর্টিজানে বন্দুকধারীদের হামলার পরপরই ঘটনাস্থলে গিয়ে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
এ সময় বন্দুকধারীদের হামলায় বনানী থানার ওসি সালাউদ্দিন ও ডিবির এসি রবিউল ইসলাম গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন।
পরে সরকার প্রধানের নির্দেশে সেনাবাহিনীর নেতৃত্বে নৌ বাহিনী, বিমান বাহিনী, বিজিবি, র্যাব ও পুলিশের নেতৃত্বে ‘অপারেশন থান্ডার বোল্ট’ শীর্ষক কমান্ডো অভিযান পরিচালিত হয়।
ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নাঈম আশফাক চৌধুরী বলেন, শনিবার সকাল ৭টা ৪০ মিনিটে অভিযান শুরু হয়। এর ১২/১৩ মিনিটের মধ্যেই সাত বন্দুকধারীর মধ্যে ছয়জন নিহত হয়। সকাল সাড়ে ৮টায় অভিযান সম্পন্ন হয়।
তিনি জানান, অভিযানকালে একজন জাপানি ও দু’জন শ্রীলংকানসহ ১৩ জন জিম্মিকে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়।
ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নাঈম আশফাক চৌধুরী জানান, সন্ত্রাসীরা পিস্তল, একে ২১ রাইফেল ও ধারালো অস্ত্র ব্যবহার করে হামলা করেছে। রাতেই তারা ২০ জিম্মিকে নৃশংসভাবে হত্যা করে।
সংবাদ ব্রিফিংয়ে জানানো হয়, লাশ ঢাকা সেনানিবাসের সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল-সিএমএইচে রাখা হয়েছে। ময়নাতদন্তের পর এসব লাশ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
এজন্য সেনা বাহিনীর প্রভোস্ট মার্শালের সঙ্গে তার মোবাইল ফোন নম্বরে (০১৭৬৯০১২৫২৪) যোগাযোগ করতে বলেছে আইএসপিআর।
উল্লেখ্য, গতকাল শুক্রবার রাত পৌনে ৯টার দিকে গুলশানের ৭৯ নম্বরের আর্টিজান রেস্তোরাঁয় ৮ থেকে ১০ জন যুবক অতর্কিত হামলা চালায়। এরপর তারা ওই রেস্তোরাঁয় থাকা লোকজনকে জিম্মি করে।
ওই রেস্তোরাঁয় জঙ্গি হামলার কিছুক্ষণ পর পুলিশের অগ্রগামী দলের দুই কর্মকর্তা জঙ্গিদের গুলি ও বোমায় নিহত হন। আহত হন অন্তত ৪০ জন পুলিশ সদস্য।
জঙ্গি হামলা চালিয়ে দেশী-বিদেশী নাগরিকদের জিম্মি করার ঘটনায় দায় স্বীকার করেছে মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেট (আইএস)। একইসঙ্গে তাদের দাবি, এ হামলায় তারা ২০ জনকে হত্যা করেছে।
বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এ ধরনের হামলা চালিয়ে আইএস মানুষকে জিম্মি করলেও বাংলাদেশে এটাই প্রথম।