ইউরোপে থাকা বা না থাকার স্নায়ুযুদ্ধে ভোগছে সমস্ত বৃটেন;;কি হবে তেইশ জুন ?
প্রকাশিত হয়েছে : ৫:২৪:০৪,অপরাহ্ন ০৮ জুন ২০১৬ | সংবাদটি ২৪২৩ বার পঠিত
রায়হান আহমেদ তপাদার, লন্ডন থেকেঃ বৃটেন ইউরোপীয়ান ইউনিয়নে থাকবে কি থাকবে না এ নিয়ে জাতীয়ভাবে সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে দেশটি আগামী ২৩শে জুন।এই তারিখে অনুষ্ঠিত হতে যা্চ্ছে গণভোট।গণভোটের ফলাফল কি হবে স্থির নিশ্চিত করে বলা মুষ্কিল তবে রাজনৈতিক মহলের ধারণা বৃটেন অবশেষে ইউরোপীয়ান ইউনিয়নেই থাকবে। এতে বৃটেনের লাভ বেশী প্রথমত: সুদীর্ঘকাল ধরে একটি ইউনিয়নের ছত্রছায়ায় থাকার অনুশীলন করে ইউনিয়নভুক্ত সকল দেশই কম-বেশী উপকৃত হয়েছে। হঠাত করে এই অনুশীলন থেকে বের হয়ে আসার মধ্যে সমস্যা রয়েছে বেশী বলেই রাজনৈতিক মহলের ধারণা। বিশেষত: ইউনিয়ন থেকে বের হয়ে যাবার পর কি ধরনের সমস্যা হতে পারে এ বিষয়ে কোন দেশেরই কোন বাস্তব অভিজ্ঞতা নেই।
বৃটেন রাজনৈতিকভাবে এক ইউরোপে রুপান্তরের কথা ভাবতে পারে না। শুধু উন্নত অর্থনীতিই নয়, শিক্ষা-সংস্কৃতি, চিকিত্সা বিজ্ঞান ভিত্তিক গবেষণাসহ বহু ক্ষেত্রে বৃটিশরা প্রকাশ্যেই তাদের অগ্রবর্তী ভাবে। ইইউয়ের আইন কানুন সবক্ষেত্রে বৃটেনের সঙ্গে সাযুজ্য পূর্ণ কিংবা সমগামী নয়। তাছাড়া ইউরোপীয় ইউনিয়নে অতিমাত্রায় সম্পৃক্ততার কারণে বৃটেন তা জাতীয় ঐতিহ্য ও বৈশিষ্ট্য হারাতে চায় না।সে ক্ষেত্রে কেউ কেউ বৃটিশ মনো ভাব কে সাম্প্রদায়িক কিংবা বা আধিপত্য বাদী মনে করলেও বিভিন্ন বৃটিশ কর্তৃপক্ষ তাদের নাগরি কদের স্বার্থ ও সুযোগ সুবিধাকেই বড় করে দেখে।তাঁরা চায় না বৃটিশ নাগরিক দের সামা জিক নিরাপত্তা কোনোভাবে বিঘ্নিত হোক।ইউরোপের বিভিন্ন সদস্য রাষ্ট্র থেকে অগণিত মানুষ কর্মসংস্থানের সন্ধ্যানে এসে বৃটিশ নাগ রিকদের সুযোগ-সুবিধা এবংবহু যোগ ধরে অর্জিত রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থাকে তছনছ করে দিক।বৃটিশরা ইউরোপীয় সদস্য দেশগুলোর সঙ্গে ব্যবসা-বানিজ্য করতে চায়, বিভিন্ন ক্ষেত্রে তাদের সাহায্য করতে চায়,এর চেয়ে বেশি
কিছু নয়।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের বিধান অনুযায়ী সদস্য রাষ্ট্রের নাগরিকরা অবাধে এক দেশ থেকে অন্য দেশে যাতায়াত ও কর্মসস্থানের সুযোগ নিতে পারে।কিন্তু বৃটেনের প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামে রুনের মতে, কর্মহীন বৃটিশ নাগরিকরা তাদের অর্থনৈতিক ও সামাজিক নিরাপত্তার কারণে বিভিন্ন অর্থনৈতিক সহযোগিতা পেয়ে থাকে।তাছাড়া আবাসিক সুযোগ সুবিধা, বিনামূল্যে স্বাস্থসেবা ও সন্তানদের শিক্ষা ক্ষেত্রে অনুদান ও ঋণ গ্রহন করতে পারে, যা অন্যান্য দেশের নাগরিকদের বেলায় প্রযোজ্য হতে পারে না।এ বক্তব্য বৃটেনের প্রধান মন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরুনে র।তাঁর মতে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ভুক্ত অন্যা ন্য নাগরিকরা বৃটেনে এসেই স্থানীয় নাগরি কদের জন্য প্রযোজ্য সুযোগ সুবিধার অংশীদা র হতে পারে না।তার জন্য বৃটিশ নাগরিকদের কর্মরত অবস্থায় ইনস্যুরেন্সের অর্থ প্রধান করতে হয়।এগুলো তাদের আইনি ব্যবস্থা।সুতরাং এতে আঘাত পড়লে বৃটিশ সামাজিক নিরাপত্তার ক্ষেত্রটি ভেঙ্গে পড়বে।আর তাই তিনি ঘোষণা করেছিলেন,
তারপরও তিনি মনে করেন বৃটেন যদি ইউরো পীয় ইউনিয়নেই থাকে, সেটাই বৃটেনের জন্য ভালো এবং জনগণের কাছে তিনি সেই সুপারি শই করছেন। ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে ক্যামেরন যে সমঝোতায় পৌঁছেছেন,তার ফলে বৃটেনের নিজস্ব মুদ্রা পাউন্ডেই থাকতে পারবে এবংইউরোপীয় ইউনিয়নের ভবিষ্যত রাজনৈ তিক একত্রীকরণ থেকে আলাদা থাকতে পার বে।এছাড়া ইউরোপের অন্য দেশ থেকে আসা অভিবাসীদের জন্য সরকারি সুযোগ সুবিধা সীমিত করে দিতে পারবে।ইউরোপীয় ইউনি য়নে থাকা না থাকা নিয়ে বৃটেনে গণভোট হবে আগামী ২৩শে জুন।এমন ঘোষণা দিয়েছেন বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন।মন্ত্রিপরি ষদের সঙ্গে বৈঠক শেষে ডাউনিংস্ট্রিটে ঐতিহা সিক এ ঘোষণা দিলেন তিনি।তিনি বলেন, ইইউতে বৃটেনের বিশেষ মর্যাদা নিশ্চিত হবার পর তার মন্ত্রিসভা এখন ইউরোপিয়ান ইউনিয় নের অংশ হিসেবে থাকার পক্ষে মত দিয়েছে।এ খবর দিয়েছে বিবিসি।শনিবার সাপ্তাহিক ছুটির দিনেও মন্ত্রিপরিষদের জরুরি বৈঠক ডেকে যেভাবে বৃটিশ প্রধানমন্ত্রীকে এই গণভো টের তারিখ ঘোষণা করতে হলো, তা থেকেই এর গুরুত্বটা স্পষ্ট।
ইউরোপীয় সদস্য দেশের কোনো নাগরিক বৃটে নে এসে বসবাস কিংবা কর্মসংস্থা নের সুযোগ গ্রহন করলেও প্রথম চার বছর তার জন্য বৃটিশ সামাজিক নিরাপত্তার বিষয় গুলো প্রযোজ্য হবেনা।একটানা বৃটেনে চার বছর কর্মরত থাকার পর বহিরাগতদের জন্যও প্রচলিত সুযোগ সুবিধা কার্য কর হতে পারে।এগুলো নিয়ে প্রধান মন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরুন ইউরোপীয় পার্লামেন্ট ও ইউনিয়নের সভাপতি ইয়েঙ্কারের সঙ্গে সম্প্রতি বিস্তারিত আলাপ আলোচনা করেছেন।তাছাড়া বৃটিশ অর্থমন্ত্রী জর্জ অসবর্ন তাঁর জার্মান ও ফ্রেঞ্চ প্রতিপক্ষের সঙ্গে কয়েক দফা বৈঠক করেছেন।কিন্তু আসন্ন তেইশ জুন বৃটেনের ইউরোপীয় ইউনিয়নে থাকা বা না থাকা নিয়ে যে গণভোট অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে তা রাষ্ট্রীয় ভাবে একটি মৌলিক বিষয়।বহু আগে ইউরোপীয় ইউনিয়ন গঠিত হলেও উনিশ শো তেয়াওর সালে বৃটিশ রক্ষণশীল দলের প্রধানমন্ত্রী স্যার এড ওয়ার্ড হীথের আমলে বৃটেন ইইউ-তে যোগ দেয়।কিন্তু জার্মানি ও ফ্রান্সের মতো পূর্ণাঙ্গভাবে নয়।
তাছাড়া নরওয়ে ও সুইজারল্যান্ড এখনো ইইউ-তে যোগই দেয়নি কিন্তু ব্যবসা বানিজ্য ঠিকই করছে।তুরস্ক ইইউ-তে যোগদানের ব্যাপারে প্রথম দিকে হন্যে হয়ে উঠলেও এখন মনে করে ইউনিয়নের বাহিরে থেকে ব্যবসা বানিজ্য করাই তাদের জন্য অধিক লাভজনক।তুরস্কের সদস্য পদের জন্য আগে যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্র নানাভাবে তদবির করলেও এখন অনেকটা নিরুত্তাপ।ইউরোপীয় ইউনিয়নে থাকার ব্যাপা রে বৃটিশ লেবার পার্টির নেতা-নেত্রী ও সদস্যরা মোটা মুটি একমত এবং না থাকার বিষয়ে রক্ষ ণশীল দলের নেতা-নেত্রী ও সদস্যরা বিভক্ত ইউরো পীয় ইউনিয়নে থাকার ব্যাপারে লন্ডন মহানগ রীর নাগরিকরা মোটামুটি সখ্যা-গরিষ্ঠ বলা চলে।তবে যাই হোক বৃটেনের প্রধান মন্ত্রী এ ব্যাপারে খুবই হতাশায় দিনাতিপাত করছে।
ইউরোপীয় ইউনিয়নে ধরে রাখতে ব্রিটেনকে ইউনিয়নের ভেতর বিশেষ মর্যাদা দিতে সম্মত হয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন।ব্রাসেলসে দীর্ঘ বৈঠকের পর, এ বিষয়ে কয়েকটি সংস্কারের ব্যাপারে সমঝোতা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ইউরোপিয়ান কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড টুস্ক। এতে সব দেশের সম্মতি পাওয়া গেছে বলে তিনি জানান।ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড
ক্যামেরন বলছেন, নতুন সমঝোতার ফলে যুক্তরাজ্য ইউরোপীয় ইউনিয়নে বিশেষ মর্যাদা পাবে।লন্ডন শহরের কল্যাণে ইউনিয় নের নিয়মনীতির বাইরে গিয়েও যেকোনো ব্যবস্থা নিতে পারবে ব্রিটিশ কর্তৃপক্ষ।নতুন সমঝো তার কারণে ইউরোপীয় ইউনিয়নের কয়েকটি ধারার পরিবর্তন করতে হবে।ইউনিয়নের সদস্যভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে ব্যবধান আরো কমিয়ে আনা বা মুক্ত চলাচলের উদ্যোগ নেয়া হলেও, সেটি যুক্তরাজ্যের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে না।
অন্যদিকে ইংলেন্ড ও ওয়েলসের কান্ট্রি সাই ডের নাগরিকরা এ ব্যাপারে অত্যন্ত বিরুপ মনো ভাবাপন্ন।তারা চায় না ইউরোপীয় হলেও ভিন্ন ভাষী ও ভিন্ন সংস্কৃতির মানুষ ক্রমাগত ভাবে বৃটেনে এসে তাদের কৃষ্টি-সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যকে ধ্বংস করুক।এ ক্ষেত্রে তারা বরংউপমহাদেশের মানুষ অর্থাত্ ভারত, পাকিস্তান ও বাংলাদেশি দের বেশি পছন্দ করে।কারণ উপমহাদেশের মানুষ ইংরেজি জানে।তাছাড়া তাদের খাদ্য বৃটেনে অত্যন্ত জনপ্রিয়।পোশাক ও সংস্কৃতি অত্যন্ত বৈচিত্রময়।তদুপরি ক্রিকে টের বেলায় সবাই একাট্রা।এমন বহু ধরনের বাদানুবাদ, তর্ক-বিতর্ক ও আলাপ আলোচনার মধ্য দিয়ে এগিয়ে আসছে ত্রিশ জুন।ঐ দিনই গোটা বৃটেন ব্যাপি অনুষ্ঠিত হবে গণভোট।মতামতের বিষয় একটিই।ইইউ-তে থাকবে কি থাকবে না।তাই এখন সবাই লাভ ক্ষতির হিসেব মিলাতে ব্যস্ত।তাদের মধ্যে একধরনের হতাশা কাজ করছে আর ভাবছে: থাকলে কতোটুকু লাভ আর না থাকলে কী পরিমাণ ক্ষতি হবে তা যেন মিলাতে পারছে না।
তার পরও সবকিছুর উর্ধে থেকে যায় ইউরোপ কে বাদ দিয়ে বৃটেন যেমন একাকিও ক্ষতির সম্মুখীন হবে টিক বৃটেনকে বাদ দিয়ে ইউরো পও দুর্বল হয়ে পড়বে।মানে কাউকে ছাড়া কেউ যেন সুখী নয়।এদিকে স্কটলেন্ড গত বছর বৃটেন ত্যাগ করে গণভোটের মাধ্যমে স্বাধীন হতে ছেয়েছিল,তারাও ইউরোপীয় ইউনিয়ন ত্যাগ করায় পক্ষে নয়।তাদের অধিকাংশ মানুষই ইইউতে থাকার পক্ষে।সবাই ইইউ থেকে লাভ বান হতে চায়, ত্যাগ স্বীকার করতে চায় না।তাছাড়া ইইউ এর সব সদস্য রাষ্ট্রের সরকার গুলোর রাজনৈতিক আদর্শ ও রাষ্ট্রীয় নীতি এক নয়।তদুপরি একমাত্র জার্মানি ছাড়া সব সদস্য রাষ্ট্রেরই কমবেশি রয়েছে অর্থনৈ তিক সমস্যা।নিজে দের অর্থনৈতিক সমস্যা মোকাবিলা করতে প্রায় সবাই হিমশিম খাচ্ছে ইউরোপীয় ইউনিয়নে থাকা এবং না থাকার ব্যাপারে বৃটেনের নাগরিকদের বিভিন্ন মতামত ও অভি ব্যক্তিতে এখন প্রতিনিয়ত তারই বহিঃপ্রকাশ ঘটছে।
অর্থনৈতিক অবস্থানের কথা বাদ দিলে বৃটেন এখনো ইউরোপের মধ্যমণি।শিক্ষা-সংস্কৃতি, জ্ঞান-বিজ্ঞান ও জীবন বৈচিত্রের দিক থেকে বৃটেন সবাইকে টানে।এ অবস্থায় আলোচনা ও বিতর্কের ক্ষেত্রে কোথায় যেন একটা নীরব পরি বর্তন সূচিত হচ্ছে।ইউরোপে থাকার ব্যাপারে যে লন্ডন, বিশেষ করে তরুণ সমাজ বেশি উদাসীনতায় ভোগছে।এইতো গত সপ্তাহেও ছিল উদাসী, এ সপ্তাহে তারাই আবার ষাট থেকে চল্লিশ সংখ্যাগরিষ্ঠ।ক্রমে ক্রমে প্রতি দিনই যেন পরিবর্তন ঘটছে সরকারি দলের প্রধান মন্ত্রী ও অর্থমন্ত্রীর মধ্যেও।রক্ষণশীল দলীয় বৃটিশ অর্থ মন্ত্রী জর্জ অসবর্ন বলেছেন, বৃটিশ ব্যবসা বানিজ্যের স্বার্থে ইউরোপীয় ইউনিয়ন হত্যাগ করা অত্যন্ত ক্ষতিকর হবে।অর্থমন্ত্রনালয়ের হিসেবে দেখা গেছে,ইউনিয়ন ত্যাগের কারণে প্রথম দুই বছরে লন্ডনে তেয়াও র হাজার চাকুরি চলে যাবে এবং ঘর-বাড়ির মূল্য ক্ষেত্র বিশেষে প্রায় বাসষ্টি হাজার পাউন্ড স্টারলিংপর্যন্ত ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।ইইউ ত্যাগ করার ফলে প্রতিটি কর্মজীবি বৃটিশ পরিবার দুই বত্সর পর বত্সরে গড়ে আটশত পাউন্ড-স্টারলিংক্ষতি গ্রস্ত হবে।এর মধ্যে আঠারো থেকে চব্বিশ বত্সর বয়সের আট হাজারের মতো তরুণ-তরুণী ক্ষতি গ্রস্ত হবে।তাছাড়া বৃটেনের ব্যবসা-বানিজ্য দারুণ হুমকির মুখে পড়বে।যা কাটিয়ে উঠতে বৃটেনের দুই বত্সরের বেশি সময় লাগবে।সে সময়ের মধ্যে অর্থনৈ তিক দিক থেকে যে ক্ষয়ক্ষতি হবে তা ব্যবসায়ী মহল মেনে নিতে রাজি নয়।
এ মুহূর্তে, যখন বৃটেনে গণভোট অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে, তখন গ্রীস, ইতালি, স্পেন ও পর্তুগালসহ কয়েকটি ইইউ সদস্য রাষ্ট্র অর্থনৈতিক বিপর্যয়ে হাবুডুবু খাচ্ছে।এ সংকট নিরসনে জার্মানি ও কয়েকটি অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠান এগিয়ে এলেও অবস্থার তেমন উন্নতি হচ্ছে না।ইইউ এর সব সদস্যের লোকসংখ্যা, সম্পদের পরিমাণ ও অর্থ নৈতিক অবস্থা এক নয়।আবার সব সদস্য রাষ্ট্রের ইউরোপীয় মুদ্রা ব্যবস্থার অধীনেও পরিচালিত হয় না।এ ক্ষেত্রে সমস্যা অনেক।সবাই ইইউ থেকে লাভবান হতে চায়,ত্যাগ স্বীকার করতে চায় না।তাছাড়া ইইউ এর সব সদস্য রাষ্ট্রের সরকারগুলোর রাজনৈতিক আদর্শ ও রাষ্ট্রীয় নীতি এক নয়।তবে শেষ পর্যন্ত ইউরোপীয় ইউনিয়নে থাকার ব্যাপারেই অধি কাংশ বৃটিশ নাগরিক মত দেবেন বলে অনেকের বিশ্বাস।
কারণ ইউরোপীয় ইউনিয়ন ত্যাগ করলে বৃটেনের লাভের চেয়ে বেশি ক্ষতির সম্ভাবণা রযেছে।তাছাড়া এরই মধ্যে বৃটিশ প্রধান মন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরুনের উত্থাপিত আইনি বিষয় গুলো ইউরোপীয় পার্লামেন্টে সুরাহা হলেই উওম হবে।কারণ বৃটেন,জার্মানি কিংবা ফ্রান্সে শুধু ইইউ এর সদস্য দেশের নাগরিক রাই নয়,বরংযেসব দেশ ইউরোপীয় নয়,এমন বহু দেশে র আশ্রিত মানুষ এখন বৃটেনসহ অন্যান্য প্রতি বেশি রাষ্ট্রে চলে আসছে।তাছাড়া সবচেয়ে বড ব্যাপার হলো বৃটেন ইইউ ছেড়ে আসলে বৃটেন কে একশত একষষ্ঠি দেশের সাথে নতুন করে বানিজ্য চুক্তিসহ নানা দ্বি-পাক্ষিক চুক্তি সম্পাদ ন করতে হবে।আর এটা করতে দশ বছর পর্যন্ত সময় লেগে যেতে পারে।ফলে এই দীর্ঘ অনিশ্চি ত সময়ে বৃটেনের অর্থনীতির ক্ষতির পরিমাণ হবে ভাবনার অতীত।
এর আগে শনিবার মন্ত্রিপরিষদের এ রকম জরুরি বৈঠক বসেছিল ১৯৮২ সালে ফকল্যান্ড যুদ্ধের সময়। ব্রাসেলসের বৈঠক থেকে ফিরে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে যে সমঝোতায় তিনি পৌঁছেছেন, তা মন্ত্রিপরিষদের বৈঠকে ব্যাখ্যা করেছেন ডেভিড ক্যামেরন।আর তার পর দশ নম্বর ডাউনিং স্ট্রিটে সাংবাদিক দের সামনে তিনি গণভোটের তারিখ ঘোষণা করেন। ডেভিড ক্যামেরন বলেন, তিন বছর আগে তিনি যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, সেই প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী এই গণভোটের তারিখ ঘোষণা করছেন।তিনি বলেন,বৃটেনের জনগণ ই এখন ইউরোপের প্রশ্নে সিদ্ধান্ত নেবেন। জনগণ যে সিদ্ধান্তই নিক, তিনি তা বাস্তবায়নে সর্বোচ্চ চেষ্টা চালাবেন।তিনি আরও বলেন, যদিও জনগণই সিদ্ধান্ত নেবেন এখন পর্যন্ত যা খবর, তাতে মন্ত্রিপরিষদের বেশির ভাগ সদস্য ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে এই সমঝোতা মেনে নিয়েছে কিন্তু মন্ত্রিপরিষদের অনেক সদস্য এর বিরো ধিতাও করছেন।তারা মনে করছেন, ক্যামেরন ইউরোপীয় ইউনিয়নের কাছ থেকে যে ছাড় আদায় করবেন বলে কথা দিয়েছিলেন,তাতে তিনি ব্যর্থ হয়েছেন।ক্ষম তাসীন কনজার ভেটিভ পার্টি এই প্রশ্নে এখন স্পষ্টতই বিভক্ত।কিন্তু ডেভিড ক্যামের নের জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ এখন বৃটেনের সাড়ে চার কোটি ভোটারকে ইউরোপে থাকার পক্ষে ভোট দিতে রাজি করানো।
এদিকে প্রতি বত্সর তিন লক্ষের অধিক মানুষ এখন বৃটেনে আসছে।কিন্তু এদের সবাই ইউরো পীয় নয়।বৃটিশ সরকারের পরিকল্পনা ছিল প্রতি বত্সর তারা এক থেকে সর্বোচ্চ দেড় লক্ষ মানুষের সংস্থান করবে।কারণ যাদের বৃটেনে এসে কাজ করার অনুমতি দেয়া হবে, তাদের পরিবারের সন্তানদের শিক্ষা, চিকিত্সা ও ক্ষেত্র বিশেষে বাসস্থানের সুযোগ-সুবিধাও সরকারকে নিতে হবে।বর্ধিত বহিরাগত মানুষের জন্য প্রয়োজনীয় সুযোগ-সুবিধার সৃষ্টি না করা হলে প্রকৃত বৃটিশ নাগরিক ও তাদের সন্তানরা দুর্ভো গের শিকার হবে।কারণ প্রকৃত বৃটিশ ছেলে-মেয়েরা তখন স্কুলে স্থান পাবে না,চিকিত্সার জন্য ডাক্তার দেখানো কিংবা হাসপাতালে জায়গা পারে না।এ বিষয়গুলোই বয়স্ক বৃটিশ নাগরিকদের অত্যন্ত ভাবিয়ে তুলেছে অন্য দিকে অপরিক ল্পিত অভিবাসন কিংবা বহিরা গতদের আগমনের ফলে বৃটেনের জনসংখ্যা এখন বেশ কিন্তু বেড়েগেছে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
এমন অপরিকল্পিত জনসংখ্যা শিগরই বৃটেনে বিভিন্ন রাজনৈতিক ও আর্থসামা জিক সমস্যা সৃষ্টি করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।আর এ কার ণেই বৃটিশ সরকার ও সচেতন নাগরিকদের একটি বিশাল অংশের এত উদ্বেগ।বৃটেনের বসতি সঙ্কট এখন চরম আকার ধারণ করেছে।অন্যদিকে স্বাস্থসেবা ক্ষেত্রে ডাক্তার ও নার্সের অভাব এমনকী শিক্ষা ক্ষেত্রে নানা ধরনের সমস্যা শুরু সরকারের নয়,নাগরিক দেরও মাথা ব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।এমন অবস্থায় অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে গণভোট।তাই এসব নিয়ে ভিশন দুশ্চিন্তার মধ্যে দিনাতিপাত
করছে গোটা বৃটেন এবংলাভ লোকসা নের আলাপ-আলোচনা বিতর্কে সরগরম সমস্ত বৃটেন।তাই বৃটেন হ্যা এবংনা’র স্নায়ুযুদ্ধের অবশান টানবে তেইশ জুন।এমনকী বৃটেনের ভবিষ্যত্ ভাগ্যও নাকি নির্ধারিত হবে ঐদিন।বৃটেন যদি ইউরোপীয় ইউনিয়ন ছেড়ে যায়, তাহলে সেটি অপরিণামদর্শী হবে বলে মন্তব্য করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা। ওবামা আরও বলেন ইইউ ছেড়ে গেলে উন্নতি আর ক্ষমতা,দুটোই হারাবে বৃটেন।