বৃটিশ বাংলাদেশীদের অবদান ও কৃতিত্ব জাতির গর্ব
প্রকাশিত হয়েছে : ১২:০১:৫৩,অপরাহ্ন ১৮ মার্চ ২০১৬ | সংবাদটি ১৯৩৩ বার পঠিত
রায়হান আহমেদ তপাদার: নানা দেশের বহু বর্ণের মানুষ একত্রে বাস করে আসছে ব্রিটেনে। স্বাভাবিক ভাবেই এরা রাজনৈতিক মতাদর্শে ভিন্নমত ও পথের সমর্থক। ব্রিটেনে বাংলাদেশী কমিউনিটির অবস্থান এখন অন্য যে কোনো সময়ের তুলনায় অনেক শক্ত এক ভিতের ওপর প্রতিষ্ঠিত। এখানকার বৃটিশ বাংলাদেশীদের এক বৃহৎ অংশ ব্রিটেনের মূলধারার রাজনীতি,অর্থনীতি, পররাষ্ট্রনীতি, আইন ও বিচার ব্যবস্থা, সংস্কৃতি ও সমাজনীতিতে ব্যাপক ভূমিকা রেখে চলেছেন। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ব্রিটিশ মূলধারার রাজনীতিতে বাঙ্গালীদের অভিষিক্ত
হওয়াই এর প্রমাণ। এদিকে ২০১৫ সালের ব্রিটেনের পার্লামেন্টের হাউস অব কমন্সে এমপি পদে নির্বাচিত হয়েছেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ৬ ব্রিটিশ নাগরিক। ব্রিটেনের রাজনীতিতে অতীতেও মেধার স্বাক্ষর রাখা এই ৬ জন হলেন-রুশনারা আলী, টিউলিপ রিজওয়ানা সিদ্দিক রূপা আশা হক, আনোয়ার বাবুল মিয়া, মিনা সাবেরা রহমান ও প্রিন্স সাদিক চৌধুরী।
এদিকে রুশনারা আলী ১৯৭৫ সালে সিলেট জেলার বিশ্বনাথে জন্মগ্রহণ করেন। মাত্র সাত বছর বয়সে পরিবারের সঙ্গে লন্ডনে অভিবাসিত হন তিনি। টাওয়ার হ্যামলেটে বেড়ে ওঠা রুশনারা অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্ট জনস কলেজে দর্শন, রাজনীতি ও অর্থনীতি বিষয়ে পড়াশোনা করেন। তারপর ক্রমে জড়িয়ে পড়েন ব্রিটিশ রাজনীতিতে। আরো উল্লেখ্য লেবার পার্টির রুশনারা আলী হলেন এখন পর্যন্ত ব্রিটেনের প্রথম এবং একমাত্র বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত সংসদ সদস্য।
দুই হাজার পনেরো সালের সংসদিয় নির্বাচনে বেশ কৃতিত্বের সাথে বিজয়ি হয়ে বৃটেনের হাউস অব কমনসে জায়গা করে নিয়েছেন আর দুইজন বাংলাদেশী কৃতি কন্যা সন্তান। তাঁরা হলেন টিউলিপ সিদ্দিক এবং রুপা আশা হক। প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে ২০১০ সালে রোশনারা আলী সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন ১১,৫৭৪ ভোট বেশি পেয়ে। সে সময় ব্রিটেনে মুসলিম এমপিদের মধ্যেও অন্যতম হিসেবে দৃষ্টি কাড়েন রুশনারা আলী। বর্তমানে বেশ সুনামের সাথেই তিনি কাজ করে চলেছেন। কিছুদিন আগেই শ্যাডো মন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে তিনি সারা বিশ্বে আলোড়ন তুলেছিলেন। এদিকে যুক্তরাজ্যে প্রথমবারের মতো ভোটে অংশ নেয়া তরুণদের জন্য ‘মাই ভয়েস, মাই ভোট’ প্রচারাভিযান শুরু করেছেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত বেথনাল গ্রীন এন্ড বো এমপি রুশনারা আলী। তরুণদের সামাজিক কর্মকান্ডে অংশগ্রহণ বাড়ানো ও গণতান্ত্রিক কর্মকান্ডে সক্রিয় করতেই তার এই প্রচারণা এছাড়া রুশনারা আলীকে ভবিষতের প্রধানমন্ত্রী হিসাবে সবচেয়ে উজ্জ্বলতম দাবীদার বলে মনে করছে বৃটেনের প্রভাবশালী রাজনৈতিক পত্রিকা নিউ স্টেটসম্যান ম্যাগাজিনটি, বৃটেনের ভবিষত প্রধানমন্ত্রী হিসাবে সম্ভাবনাময় যে ২০ জন এমপির নাম প্রকাশ করেছে তার মধ্যে রুশনারা আলীর স্থান সবার উপরে। তাছাড়া মিস আলী বৃটিশ পার্লামেন্টের একজন উদীয়মান তারকা”শীর্ষক প্রচ্ছদ প্রতিবেদনে অনুর্ধ ৪০ বয়সের ২০ জন এমপির তালিকা দিয়ে বলা হয়েছে, তাদের উজ্জ্বল রাজনৈতিক ভবিষত রয়েছে। তাদের মধ্য থেকে অনেকেই আগামীতে বৃটেনের মন্ত্রীসভায় স্থান করে নিবেন। এমনকি এদের মধ্য থেকেই বেরিয়ে আসবেন ভবিষ্যতের প্রধানমন্ত্রী।
যুক্তরাজ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন সেক্টরে নেতৃত্ব দিয়ে আসছেন বৃটিশ বাংলাদেশিরা। ব্যবসা-বাণিজ্য ও সামাজিক কর্মকান্ডে সাফল্য পেয়ে দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করা বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ নাগরিকরা এখন ধীরে ধীরে বৃটেনের মূল ধারার রাজনীতিতে সক্রিয় হচ্ছেন। স্বাভাবিকভাবেই এ প্রেক্ষিতে বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত বেশ কয়েকজন জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হচ্ছেন। এর মাধ্যমে বিদেশে বাংলাদেশের মান-মর্যাদা ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। আশা করছি,নিজ কর্মগুণ আর রাজনৈতিক প্রজ্ঞা,দূরদর্শিতা এবং বিচক্ষণতার সাথে এগিয়ে চলা উপরোক্ত বাঙ্গালীরা ব্রিটিশ বাংলাদেশী ইতিহাসকে আগামীতে আরো উজ্জ্বল করে তুলবে। আর এটাই বৃটেন প্রবাসীদের প্রত্যাশা। তাছাড়া তাঁদের এই কৃতিত্বে আমাদের তরুণ প্রজন্মরা অনুপ্রাণিত হয়ে তাঁরাও বাংলার মুখ উজ্জ্বল করবে বলে আমার বিশ্বাস।
একটা সময় ছিল বৃটিশ বাংলা দেশীরা খুবই কষ্টের মধ্যে প্রবাস জীবন অতিবাহিত করেছেন। যা ভাবতেও কষ্ট হয়। ভাবতে পারেন আমি আবার এসব কেন টেনে আনছি। এসব টেনে আনার উদ্দেশ্য হলো বর্তমান প্রজন্মদের কে বুঝিয়ে দেয়া বা মনে করিয়ে দেয়া:আমরা বৃটেনে উড়ে এসে জুড়ে বসিনি। আমাদের বাপ দাদাদের অনেক ত্যাগ তিতিক্ষার বিনিময়ে আজ আমরা এখানে। তাই শ্রদ্ধাভরে আমাদের পূর্বপুরুষদের বা উত্তর সুরিদের কথা মনে রেখে এগিয়ে যেতে হবে। একটা সময় ছিল আমাদের কোমিউনিটির বেশির ভাগ মানুষ বেকার ছিল। তাঁরা কাজের সুযোগ থেকে বঞ্চিত ছিলেন । এমন কি সন্তানদের স্কুলে দেওয়াও অনেক সমস্যা ছিল। ঊনিশ শো সত্তর দশকের শেষের দিকে বাংলাদেশীদের বিরুদ্ধে সহিংসার মাত্রাও বেড়ে গিয়েছিল।অভিবাসন বিরুধী বেথনাল গ্রীন তখন সক্রিয় হয়ে উঠেছিল।তারা তখন অভিবাসন বিরোধী লিফল্যাট বিতরণ করতো।”স্কিন হেড”বলে পরিচিত শেতাংঙ্গরা তখন ব্রিকলেনে ভাঙচুর করতো, বাঙালী শিশুদের লক্ষ করে থুথু ছিটাতো আর মহিলাদের কে নিগৃহ করতো।এদের ভয়ে শিশুরা আগেভাগেই স্কুল থেকে বেরিয়ে যেত, আর মহিলারা ও পুরুষরা দল বা জোট বেঁধে হাঁটা চলা এবং কাজ কর্ম করতেন।বাবা মায়েরা নিজেদের এবং সন্তানদের নিরাপত্তার কথা ভেবে সন্তানদের উপর এক ধরনের কারফিউ জারি করে রাখতেন।আর বাড়ি ঘরকে অগ্নি সংযোগের হাত থেকে রক্ষা করতে আগুন প্রতিরোধী লেটার বক্স স্থাপন করে রাখতেন।এইভাবে চলছিল বাংলাদেশীদের জীবন চলা।
উনিশশো আটাওর সালের সাতই মে কাজ থেকে বাড়ি ফেরার পথে আলতাব আলী নামের পঁচিশ বছরের এক তরুণ কে অন্য ধর্মী তিন কিশোর হত্যা করে।একে জাতিগত উন্মাদনার ফল হিসেবেই ধরে নেয়া হয়।এ হত্যাকান্ডের ফলে সেখানকার বাংলাদেশীরা একত্রিত হয়ে এ ধরনের হামলা প্রতিহত করার উদ্যোগ নেন এবং ন্যাশনাল ফ্রন্টের বিরুদ্ধে ব্রিকলেনে বাংলা দেশীরা প্রতিবাদ সমাবেশ করে।এর ফলশ্রুতিতেই বাংলাদেশ ইয়োথ মোভমেন্ট নামের সংগঠনের উত্পত্তি হয়।এবং চৌদ ই মে প্রায় সাত হাজারের মত বাংলাদেশীরা জড়ো হয়ে আলতাব আলীর কফিন নিয়ে হাইড পার্কে জাতিগত সহিংসতার বিরুদ্ধে বিক্ষোবে ফেটে পড়েন।তখন অনেক বাঙ্গালী তরুণ স্থানীয় ভাবে সংঘটিত হয়ে স্কিনহেডদের ওপর চড়াও হতে শুরু করে।আর তখন থেকে বৃটেনে বর্ণবাদী আন্দোলনের সঙ্গে আলতাব আলীর নাম জড়িয়ে আছে আর এখনও সেটা বৃটেনের মানবাধিকার আন্দোলনে বেশ শ্রদ্ধার।ভাবেন তো আমরা কোন অবস্থা থেকে আজ এই অবস্থানে।মনে রাখবেন যাদের আত্মত্যাগে আজ আমরা বেশ দাপটের সাথেই এগিয়ে যাচ্ছি।নতুন প্রজন্মদের প্রতি উদাত্ত আহ্বান থাকবে আপনারা নিজের জীবনকে প্রতিষ্টা করার সাথে সাথে দেশকেও গৌরব উজ্জ্বল করবেন।
এদিকে ব্যারোনেস মঞ্জিলা পলা উদ্দিন প্রথম বাংলাদেশী মুসলমান নারী হিসেবে হাউজ অব লর্ডসে প্রবেশ করেছেন।তিনি নিজের ধর্মীয় বিশ্বাস অনুযায়ী শপথও নিয়েছেন।আনোয়ার চৌধুরী দুই হাজার চার সালে বাংলা দেশে বৃটিশ হাইকমিশনার হিসেবে নিয়োগ পেয়ে ছিলেন।আর তিনিই প্রথম অশেতাঙ্গ হিসেবে কুটনৈতিক পদে নিয়োগ পেয়ে ছিলেন।বৃটেনের সবচেয়ে বড় মুসলিম কাউন্সিল অব বৃটেনের চেযারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন ড.মোহাম্মদ আব্দুল বারী।আর মুরাদ কুরেইশী লেবার দলের রাজনীতিবিদ হিসেবে গ্রেটার লন্ডন এসেম্বলিতে দায়িত্ব পালন করেন।এছাড়া অনেকেই বৃটেনে মিডিয়া,ব্যবসা বানিজ্যে এবংআরও বিভিন্ন ক্ষেত্রে বড় রকমের অবদান রেখে চলেছেন।যা গর্বের সাথে আমাদের কোমিউনিটিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে।তার সাথে সাথে আমাদের কোমিউনিটির সকলের প্রতি বিনীত অনুরোধ থাকবে:আমরা সব বেঁধা বেধ ভূলে যেন একত্রে সংঘটিত হয়ে কাজ করতে পারি।তবে আমরা আরও অনেক দূর এগিয়ে যেতে পারবো বলে আমার বিশ্বাস।মনে রাখবেন প্রবাসে আমাদের একটাই পরিচিতি, আমরা সবাই বাংলাদেশী।
বৃটেনের অর্থনীতিতে বাংলাদেশী কোমিউনিটির অবদানের কথা স্বীকার করে বৃটিশ প্রধান মন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরুন বলেছেন।এখানকার কয়েক লাখ বাংলাদেশী সরাসরি এদেশের অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে কাজ করে যাচ্ছেন।তিনি বৃটিশ বাংলা দেশীদের আরও ভাল ভাল কাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত হওয়ার আহ্বানও জানিয়েছেন।তার সাথে সাথে তিনি এও বলেছেন বৃটিশ বাংলাদেশীরা একাডেমিক শিক্ষা ক্ষেত্রেও অনেক এগিয়ে যাচ্ছে।জিসিএসি এবংএ লেভেল পরীক্ষায় ফলাফলের ক্ষেত্রেও শীর্ষ স্থান দখল করে যাচ্ছেন।এমন কি উচ্চ শিক্ষায়ও বাংলাদেশীরা এগিয়ে।এছাড়া সম্প্রতি বিশ্বকাপ ক্রিকেটে বাংলাদেশ দল ইংল্যান্ডকে পরাজিত করায় তাঁর কোন দুঃখ নেই উল্লেখ করে ডেভিড ক্যামেরুন বাংলাদেশ ক্রিকেট টিমকে অভিনন্দন জানান।বৃটেনের প্রধান মন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরুন আরও চমত্কার বানি শুনিয়েছেন।বৃটেনে বাংলাদেশীরা যেভাবে এগিয়ে যাচ্ছে,আগামী দিনে বৃটিশ বাংলাদেশীদের মধ্যে থেকে প্রধান মন্ত্রী নির্বাচিত হবেন।যুক্তরাজ্যের বার্মিংহামে অনুষ্ঠিত বৃটিশ বাংলাদেশী বিজনেস এওযারড অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে তিনি এমন আশার কথা শুনিয়েছেন।যা আমাদের ভবিষ্যত্ প্রজন্মের জন্য দারুণ উত্সাহ যুগাবে বলে আমার বিশ্বাস।
বৃটিশ বাংলাদেশী কোমিউনিটির পক্ষ থেকে আমি নতুন প্রজন্মদের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানাবো।আমি দেখতে পাচ্ছি আপনাদের মাঝে এক শুপ্ত প্রতিভা লুকিয়ে আছে।যা শুধু প্রস্ফুটিত হওয়ার অপেক্ষায় আছে।আর এটা প্রস্ফুটিত হওয়া মানেই আপনার ও লাল সবুজের পতাকার গর্ব সারা বিশ্বে ছড়িয়ে দেয়া।আর তাইতো আমার বিনীত এই আহ্বান,আপনারা আপনাদের মেধাকে কাজে লাগিয়ে নিজেদের ভবিষ্যত্ গৌরবোজ্জ্বল করবেন।তাছাড়া এখানে আপনারা যে সুযোগ সুবিধা পাচ্ছেন বাংলাদেশের তরুন সমাজ তা পাচ্ছেন না।আমার কথা হচ্ছে এত সুযোগ সুবিধা আপনারা কেন হাত ছাড়া করবেন।আরও মনে রাখবেন সবার ভাগ্যে এমন সুযোগ আসে না বা অনেকে পায় না।আমার বিশ্বাস আপনারা যে যার জীবনের লক্ষকে সামনে রেখে দৃঢ় মনোবল নিয়ে একটু কষ্ট করে যদি পড়াশুনা করেন তবেই আপনাদের উজ্জ্বল ভবিষ্যত্ নিশ্চিত বলে আমি মনে করি।আমাদের নতুন প্রজন্মরা সবকিছু বুঝার ক্ষমতা রাখে না তাই এ ব্যাপারে অভিভাবকদের দায়িত্ব হবে আপনাদের ছেলে মেয়েদের দায়িত্ব ও কর্তব্য সম্পর্কে সচেতন থাকা এবংসঠিক পথে পরিচালনা করা।তার সাথে সাথে খেলাধুলার প্রতি মনোযোগ আকর্ষণ করানোও আপনাদের দায়িত্ব।যা ভাল থাকার সহায়কও বটে।
মনে রাখবেন,গার্ডিয়ানদের গাইডেন্সের উপর বেশিরভাগ নির্ভর করবে সন্তানদের উজ্জ্বল ভবিষ্যত্।ওরা তো আপনার আমার এমনকী একটা দেশ ও জাতির গর্ব।এখানেই শেষ নয় আমাদের ইহোকাল ও পরকালেও ওদের ভূমিকা অনেক।আর তাই তো বুঝতে ই পারছেন,সন্তানদের প্রতি কী করা আমাদের করণীয়।আশা করি এ ব্যাপারে সবাই সূচ্ছার থাকবেন।
বৃটিশ বাংলাদেশীদের ভাল ফলাফলের এওয়ার্ড বিতরনী অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ সরকারের মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রী ড. শিরিন শারমিন চৌধুরী বলেছেন বিদেশে এ ধরনের উদ্যোগ খুবই দরকারি ও প্রশংসনীয়।তার সাথে বৃটেনে অধ্যয়নরত বাংলাদেশী বংশোদ্ভুত ছাত্র-ছাত্রীরা পরীক্ষায় ভাল ফলাফল অর্জনের মাধ্যমে তাদের যোগ্যতা ও মেধার পরিচয় দিচ্ছে।তাছাড়া বৃটিশ বাংলাদেশীরা এখন অক্সফোর্ড এবংকেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় সহ বিখ্যাত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অধ্যয়ন করছে এবংডাক্তার ইঞ্জিনিয়ারের মত প্রফেশ্যানেও সাফল্যের সাথে অবদান রাখছেন।এতে করে তারা যেমন নিজেকে গৌরব উজ্জ্বল স্থানে অধিষ্ঠিত করে যাচ্ছেন তার সাথে সাথে লাল সবুজের বাংলাকেও গৌরবান্নিত করে চলেছেন।দোয়া করি বৃটিশ বাংলা দেশীদের এই অগ্রগতি যেন অব্যাহত থাকে এবংনতুন প্রজন্মরাও অনুপ্রাণিত হয়ে বাংলাদেশের মর্যাদাকে আরো অনেক দূর এগিয়ে নিয়ে যাবেন এবং বৃটিশ প্রধান মন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরুনের আশার বাণীকে প্রতিষ্ঠা করবেন।
বৃটিশ বাংলাদেশীদের সাথে সাথে বিশ্বের বহু দেশে বাংলাদেশীরা ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছেন এবং কতশত অবদান রেখে বাংলাদেশ কে যেমন গর্বিত করছেন তেমনি বাংলাদেশের অর্থনীতিতে বিরাট ভূমিকা রেখে যাচ্ছেন।আর তাতে করে গর্বের বাংলা দেশ টা আরও অনেক দূর এগিয়ে যাবার কথা ছিল,কিন্তু দারুণ কাল শাপ রাজনীতি সবকিছু গ্রাস করে নিচ্ছে।আর এটাই বাংলাদেশীদের একমাত্র দুর্ভাগ্য বলে প্রবাসীদের ধারনা।বৃটিশ প্রবাসী বাংলাদেশীরা এখন আর আগের মত পিছিয়ে নেই।হাঁটি হাঁটি পা পা করে অনেক দূর এগিয়ে এসেছেন বেশ সুনামের সাথে।এটা শুধু আমার একার কথা বা মন্তব্য নয়।বৃটেনের অনেক এম পি ও মন্ত্রী মিনিস্টার বিভিন্ন অনুষ্ঠানে এ কথাগুলো বার বার বলে যাচ্ছেন।যা বৃটিশ বাংলা দেশীদের এগিয়ে যেতে সহায়ক হবে বলে আমার বিশ্বাস।এই তো কিছুদিন আগেও লন্ডনের ইজলিংটন নর্থ থেকে নির্বাচিত এম পি জেরেমি করভিন ইজলিংটন বারার ইজলিংটন টাউন হলে বারার প্রথম বৃটিশ বাংলাদেশী মেয়র জিলানি চৌধুরীর সম্বর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথাগুলো বলেছিলেন।
বৃটেনে বৃটিশ বাঙ্গালীদের অবদান ও অর্জনকে তুলে ধরতে কাজ করছেন বৃটিশ বাংলাদেশী বিজনেস ফোরাম সহ আরো অন্যান্য অনেক মিডিয়া ব্যবস্থাপনার কর্ম কর্তারা,যাঁদের এই অবদান জাতি শ্রদ্ধাভরে স্বরণ করছে।বৃটিশ বাংলাদেশীদের পক্ষ থেকে বিনীত অনুরোধ থাকবে আপনারা আরও ত্যাগ শিকার করে হলেও বাংলাদেশ ততা বৃটিশ বাংলাদেশীদের অবদানকে সারা বিশ্বে ছড়িয়ে দেবেন।আর এতে করে বৃটিশ বাঙ্গালী নতুন প্রজন্মদের এগিয়ে যেতে অনুপ্রেরণা যুগাবে।এইতো আরও একজন কৃতিত্বমান বাংলা দেশী বৃটেনে রাজকীয় সম্মাননায় “এমবিই মনোনীত হয়েছেন বাংলাদেশী রেস্তুরা সমিতির সভাপতি বজলুর রশীদ,এমবিই।শীর্ষপর্যায়ের উদ্যোক্তা ও ব্যবসায়ী হিসাবে অনন্য কৃতিত্বের স্বীকৃতি স্বরুপ নতুন বছরের আগমন উপলক্ষে বৃটিশ সরকারের পরামর্শে রাজপরিবারের পক্ষ থেকে তাঁকে এ উপাধিতে ভূষিত করা হয়।
পরিশেষে বলতে চাই,বৃটেনের শীর্ষ বেসামরিক রাজকীয় পদক বিজয়ী;বজলুর রশীদ এমবিই আরো একজন সফল বৃটিশ বাংলাদেশী।এরকম আরও কত নাম না জানা বৃটিশ বাংলাদেশী কৃতিত্বের সাথে যুক্ত রাজ্যের বিভিন্ন অঞ্চলে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছেন এবংবেশ কৃতিত্বের সাথে নিজের ও জাতির সম্মান বয়ে আনছেন।তাদের প্রতি থাকলো থাকলো,লাল সবুজের শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন।তাছাড়া আরো অনেক কৃতিয়মান বাংলাদেশী যুক্তরাজ্য সহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বেশ কৃতিত্বের সাথে আছেন,কিন্তু আমার লিখার স্বল্পতার কারণে সবাইকে উল্লেখ করতে পারিনি বিধায় ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি।সবাই যে যার অবস্থানে আছেন ভাল থাকবেন। এই শুভ কামনায় বিদায় চাইছি আমি।