একটি অধ্যায়ের পরিসমাপ্তি
প্রকাশিত হয়েছে : ২:৫৮:৫৭,অপরাহ্ন ২৬ অক্টোবর ২০২১ | সংবাদটি ১১৩৬ বার পঠিত
*একটি অধ্যায়ের পরিসমাপ্তি*
আমার বাবা-চাচারা ছিলেন মোট ৪ জন-
১/মরহুম আতিকুল হক (বাবা)
২/মরহুম ফারুক আহমদ(বড় চাচা)
৩/মরহুম মাসুক আহমদ(মেজ চাচা)
৪/মরহুম লুৎফুল হক মায়া(ছোট চাচা)
১-বাবা-চাচাদের মধ্যে আমার বাবা মরহুম আতিকুল হক ছিলেন সবার বড়,তিনি তার জীবদ্দশায় অনেক মহান পেশার সাথে জড়িত ছিলেন, একজন আদর্শ শিক্ষক হিসেবে উনার যথেষ্ট সুনাম রয়েছে, উপজেলা জুড়ে রয়েছে তার অসংখ্য ছাত্র- ছাত্রী, ছিলেন একজন নিষ্ঠাবান কলম সৈনিক(সাংবাদিক) জকিগঞ্জ প্রেসক্লাবের সাথে ছিল গভীর সম্পর্ক, একজন দায়িত্ববান দলিল লেখক হিসাবে রয়েছে উপজেলা ব্যাপী সুপরিচিতি, জীবনের একটি অংশে রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলেন, জকিগঞ্জ- করিমগঞ্জ সীমান্তে কিছুদিন ব্যবসাও করেছিলেন, জীবনের শেষ দিকে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে গত ২৭-০৩-২০০৮ খ্রিস্টাব্দে মহান রবের ডাকে সাড়া দিয়ে দুনিয়ার সফর শেষ করেন।
২- মরহুম ফারুক আহমদ ছিলেন আমার বড় চাচা উনি একজন প্রভাবশালী রাজনীতিবিদ হিসেবে জকিগঞ্জ উপজেলা ব্যাপী ছিল যথেষ্ট সু-খ্যাতি, ছিলেন বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের দায়িত্বে, জীবনের একটি অংশ ইউরোপের বিভিন্ন দেশেও ভ্রমণ করেছেন,জীবনের শেষ পর্যন্ত জকিগঞ্জ উপজেলার ঐতিহ্যবাহী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জকিগঞ্জ ফাজিল সিনিয়র মাদ্রাসার গভর্নিং বডির অন্যতম সদস্য হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছেন। বিভিন্ন জটিল রোগে আক্রান্ত হয়ে গত ৩০-০৯-২০২১ খ্রিস্টাব্দে ইন্তেকাল করেন।
৩-মরহুম মাসুক আহমদ ছিলেন আমার মেজ চাচা, অত্যন্ত নিরহংকারী, সদা হাস্যজ্জল ছিলেন, দীর্ঘদিন জকিগঞ্জ উপজেলার একমাত্র সংবাদপত্র এজেন্ট ছিলেন, পুরো জকিগঞ্জ উপজেলা ও কানাইঘাট উপজেলা(একাংশ) সংবাদপত্র প্রতিষ্ঠার অন্যতম কারিগর ছিলেন, দুটি সফল ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী ছিলেন তাদের মধ্যে একটি হচ্ছে সিলেটের জিন্দাবাজারস্থ মিলেনিয়াম লাইব্রেরী(বর্তমানে নেই) এবং অন্যটি হচ্ছে জকিগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান মাসুক লাইব্রেরী( বর্তমানে বিদ্যমান) উনার উপজেলা জুড়ে রয়েছে যথেষ্ট পরিচিতি, গত ১৯-১০-২০১৩ খ্রিস্টাব্দে আকস্মিক ইন্তেকাল করেন।
৪-মরহুম লুৎফুল হক মায়া ছিলেন আমার ছোট চাচা, উনি ছিলেন একজন গম্ভীর প্রকৃতির মানুষ, এলাকার মানুষ উনাকে খুবই কম চিনে কারণ জীবনের বড় একটি অংশ প্রবাসে কাটিয়েছেন, শরীরের বিভিন্ন অসুস্থতা নিয়ে প্রবাস থেকে চলে আসেন, দেশে এসে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ০৫-০৬-২০১২ খ্রিস্টাব্দে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
আজ আমার বাবা- চাচারা কেউই জীবিত নেই,সবাই মহান প্রভুর ডাকে সাড়া দিয়ে পরকালে পাড়ি জমিয়েছেন।
এমনকি আমার বাবা-চাচাদের গর্ভধারিণী মা (শতবর্ষী) আমার দাদি গত ১৮-০৯-২০২১ খ্রিস্টাব্দে মহান রবের ডাকে সাড়া দিয়ে তিনিও আমাদের ছেড়ে না ফেরার দেশে চলে গেছেন।
মহান আল্লাহ তাআ’লা আমাদের পরিবারের সবাইকে ধৈর্য ধরার তৌফিক দান করেন এবং আমার বাবা-চাচাদের সকল ভুল-ত্রুটি ক্ষমা করে দিয়ে জান্নাতুল ফেরদৌসের মেহমান হিসেবে কবুল করেন, আমীন।
লেখক. মোহাম্মদ শাফি