সিলেটে এক তরুনীর ফেসবুক প্রেম : ৫ লাখ টাকার স্বর্ণালংকার নিয়ে প্রেমিক উধাও!
প্রকাশিত হয়েছে : ৪:০৩:২৪,অপরাহ্ন ২০ জুন ২০১৬ | সংবাদটি ২০৩৮ বার পঠিত
সিলেটের এক চাকুরিজীবী তরুণী প্রেম করেছিলেন ফেইসবুকে। প্রেমিকের বাড়ি রাজধানী ঢাকা শহরে। উভয়ের মধ্যে দীর্ঘদিন প্রেম চলে ফেসবুকে। শেষ পর্যন্ত তা গড়ায় মোবাইল ফোনে। প্রেমের গভীরতা ছড়িয়ে পড়ে তরুণীর পরিবারেও। ফেসবুক প্রেমের প্রেমিক ও প্রেমিকা দেখা করার পরিকল্পনা নেয়। পরিকল্পনা অনুযায়ী প্রেমিক একটি দামি গাড়ি নিয়ে ছুটে আসে সিলেটে। তারপর কয়েক ঘন্টার ব্যবধানে প্রেমিক তার প্রেমিকার কাছ থেকে ৫ লাখ টাকার স্বর্ণালংকারসহ দামি জিনিস নিয়ে হাওয়া হয়ে যায়। এ নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে সিলেট নগরীর আগপাড়ার এলাকার মানুষের মধ্যে। স্থানীয় কাউন্সিলর উজ্জলও ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়েছেন বলে জানা গেছে।
স্থানীয়রা জানান, বাংলাদেশ ব্যাংক সিলেট শাখার ভোল্টের কর্মচারি ও আগপাড়ার এলাকার বাসিন্দা আবুল হোসেনের মেয়ে রুমি বেগম ফেসবুকের মাধ্যমে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলেন রাজধানীর এক যুবকের সঙ্গে। দীর্ঘ প্রেমের পর ওই যুবক গত ২৭ মে একটি ভক্সি গাড়ি রিজার্ভ করে সিলেট আসে। রাস্তায় গাড়ির চালককে অতিরিক্ত ৫০০ টাকা দিয়ে বলে কেউ যদি জিজ্ঞেস করে গাড়ির মালিক কে তাহলে সে যেন বলে গাড়ির মালিক ওই যুবক।
লোকেশন নিয়ে যুবকটি সরাসরি রুমি বেগমের বাসায় গিয়ে হাজির হয়। দামি গাড়ি দেখে পরিবারের সবাই যুবকের প্রতি দুর্বল হয়ে পড়ে। তরুণীকে ওই যুবকের সঙ্গে মেলামেশার অবাধ সুযোগ করে দেয়। দুপুরের খাবার শেষে রুমি একটি দামি ক্যামেরা ভাড়া করে কুমারপাড়ার একটি স্টুডিও থেকে। যা দিয়ে দুজনের ছবি তোলার কথা। এক পর্যায়ে তারা বাসা থেকে বের হয় কিছু কেনাকাটা করতে। এজন্য তারা প্রথমে যায় একটি স্বর্ণের দোকানে।
পূর্ব জিন্দাবাজারের ভেনিস জুয়েলার্সে গিয়ে সাড়ে তিন লাখ টাকার স্বর্ণালংকার ক্রয় করে রুমির জন্য। স্বর্ণালংকারের দাম পরিশোধ করতে ব্যাংক থেকে টাকা তুলতে হবে। সাথে নিতে হবে স্বর্ণালংকারও। কারণ ব্যাংকে গিয়ে স্বর্ণালংকার না দেখালে টাকা পাশ হবে না। এই বলে যুবকটি ফেইসবুক প্রেমিকা রুমি ও ভাড়া করে নেওয়া ভক্সি গাড়ি রেখে একটি অটো রিকশায় চড়ে স্বর্ণালংকারসহ ব্যাংকের উদ্দেশ্যে বের হয়। এর পর মিনিটের পর ঘন্টা কেটে যায়। কিন্তু যুবকের ফিরে আসার কোনো লক্ষণ নেই। রুমির কাছ থেকে নেওয়া মোবাইল ফোনে রিং দিলে তা বন্ধ পাওয়া যায়। এ নিয়ে জুয়েলার্সের মালিকের মধ্যে প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। রুমিকে আটকে রেখে তার পরিবারের সদস্যদের খবর দেয়া হয়।
পরিবারের সদস্যরা ছুটে আসেন জুয়েলার্সের দোকানে। ডেকে আনা হয় স্থানীয় কাউন্সিলর উজ্জলকে। কাউন্সিলর গাড়ির চালককে আটক করতে চাইলে সে জানায় আমি ভাড়ায় এসেছি। আমাকে পুলিশে দিয়ে দেন। আইনের মাধ্যমে আমি আমার ব্যবস্থা করবো। চালকের এই কথায় দুর্বল হয়ে পড়েন কাউন্সিলর। চালককে ছেড়ে দেওয়া হয়। কিন্তু রুমির পরিবার স্বর্ণালংকারের মূল্য পরিশোধ করবে এমন প্রতিশ্রুতি দেওয়ার পর ছেড়ে দেওয়া হয় রুমিকে। এছাড়া ওই যুবক নিয়ে যায় রুমির ভাড়া করা মূল্যবান ক্যামেরাটিও। স্টুডিওর মালিক এখন ওই ক্যামেরার মূল্য দেড় লাখ টাকা দাবি করছেন।
এ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে স্থানীয় ১৮ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর জিল্লুর রহমান উজ্জ্বল জানান, বিষয়টি সত্য এবং এটা পারিবারিক ভাবে মীমাংসা করেছি। জুয়েলার্স ও স্টুডিওর দাবিকৃত টাকাও দেয়া হয়েছে।
তবে এ ব্যাপারে ভেনিস জুয়েলার্স কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করা হলে তাদেরকে ফোনে পাওয়া যায় নি। ঘটনা এলাকায় জানাজানি হলে স্থানীয়রা নানা কথা বলছেন। স্থানীয়রা বলছেন ফেইসবুকে প্রেম করলে দেনমোহর দিতে হয় ছেলেকে এটা তার প্রমাণ। সুত্র: নিউজ মিরর