শিলচরের বন্যা পরিস্থিতির তেমন উন্নতি হয়নি
প্রকাশিত হয়েছে : ২:৪০:৫০,অপরাহ্ন ২৬ জুন ২০২২ | সংবাদটি ৫৩২ বার পঠিত
তাজ উদ্দিন, শিলচর (আসাম), ২৫ জুন: শতাব্দীর সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যার কবলে পড়েছে দক্ষিণ আসামের সবচেয়ে বড় শহর শিলচর। গত কয়েক দশকে যে সব এলাকার লোকেরা বন্যার জল দেখেননি তারাও এখন ঘরের ভিতর গলাজলে হাবুডুবু খাচ্ছেন। আসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা বৃহস্পতিবার শিলচরের বন্যা কবলিত এলাকা পরিদর্শন করেন। তিনি ত্রাণ সামগ্রী বিতরণে গতি বাড়াতে নির্দেশ দিয়েছেন। কিন্তু শুক্রবারও দেখা গেছে মানুষের দুর্ভোগের শেষ হচ্ছে না। করিমগঞ্জ, বদরপুর ও হাইলাকান্দির শহর ও গ্রামাঞ্চল থেকে অনেকেই শিলচরে ত্রাণ সামগ্রী নিয়ে যাচ্ছেন।
বুধবার বিকাল থেকে বরাক নদীর জলস্তর কমতে শুরু করলেও শিলচর শহরে ঢুকে যাওয়া জল এখনও কমছে না। একদিকে কমলেও অন্যদিকে নতুন করে প্লাবিত হচ্ছে। বৃহস্পতিবার সোনাই রোড এলাকার জল কমলেও তারাপুরে জল বাড়ার খবর পাওয়া গেছে। শুক্রবারও একই অবস্থা ছিল।
শিলচরের মানুষদের বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলা করার মতো কোনও ধরনের পূর্ব প্রস্তুতি ছিল না। এর ফলে পানীয় জলের জন্য সবচেয়ে বেশি কষ্টের মোকাবিলা করতে হচ্ছে। চিকিৎসা পরিষেবাও বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। শিলচর থেকে বদরপুর পর্যন্ত রেল লাইনের উপরেও জল উঠে গেছে। তবে বদরপুর শহর এখনও কিছুটা নিরাপদ রয়েছে। যদিও শহরতলি এলাকা খাদিমানে বাঁধ ভেঙে নতুন করে প্লাবিত হয়েছে বিভিন্ন এলাকা। বদরপুরের মিশন রোড সম্পূর্ণ জলের নিচে চলে রয়েছে। বদরপুরের গ্রামাঞ্চলের বন্যাক্রান্তদের সহায়তায় বেশ কিছু শিবির খোলা হয়েছে। বিভিন্ন শিবিরে ত্রাণ বিতরণ করা হচ্ছে।
বিভিন্ন এলাকায় বন্যার ফলে বিদ্যুৎ ও মোবাইলের ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। তাই, বিপদের সময় অনেকেই সাহায্য চেয়ে ফোন পর্যন্ত করতে পারছেন না। বৃহস্পতি ও শুক্রবার শিলচরে বায়ুসেনার হেলিকপ্টার যোগে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে। তবে এই প্রক্রিয়া তেমন সাফল্য না পাওয়ায় এখন ঘরে ঘরে ত্রাণ পৌঁছে দেওয়ার কাজ চলছে।
এদিকে, বিভিন্ন জায়গায় মরদেহ সৎকার নিয়ে সবচেয়ে বেশি সমস্যা দেখা দিয়েছে। শ্মশান কবরস্থান, সব জায়গা জলের নিচে চলে যাওয়ায় এই সমস্যা নিয়ে মানুষজন হিমশিম খাচ্ছেন। এমনকি মরদেহ সৎকার করতে না পেরে ভেলায় তুলে জলে ভাসিয়ে দেওয়ার ঘটনাও ঘটছে।
ওদিকে, শুক্রবার জুম্মার নামাজের পর বিভিন্ন মসজিদে বিশেষ দোয়া করা হয়েছে। বৃহত্তর সিলেট বিভাগ সহ আসামের বন্যা পরিস্থিতি থেকে মুক্তি চেয়ে পরম করুণাময় আল্লাহ তায়ালার কাছে প্রার্থনা করা হয়।